বিশ্বভারতী (Viswabharati )পারেনি কিন্তু করে দেখাল বাংলার সরকার। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিংবা কবিগুরুর সৃষ্টি নিয়ে কোন রকমের ছেলেখেলা বরদাস্ত নয়, পৌষ মেলার সূচনায় কড়া বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (CM)। রবিবাসরীয় সকাল থেকেই শান্তিনিকেতনের বাতাসে ভাসছে সানাইয়ের সুর, নিয়ম মেনে ছাতিম তলায় উপাসনা। কবিগুরুর প্রাণের আরাম স্থলে ধ্বনিত হল ‘মোরে ডাকি লয়ে যাও মুক্ত দ্বারে’। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্য সরকার (Government of West Bengal) বীরভূম জেলার প্রশাসনকে দিয়ে ‘বিকল্প’ পৌষমেলার আয়োজন করছে। আজ তার সূচনা। দূরভাষে শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী, শুরু হল ১২৫ তম পৌষ মেলা। তিনি ফোনে বলেন, “গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ, আমার মন ভোলায় রে। এই গানটি আজও আমাদের কাছে সমাদৃত এবং বিশ্বজনিন। কবিগুরুর অবদান বিশ্বের কাছে অবদান রয়েছে।” পাশাপাশি ভালবাসার আর সতর্কতার সঙ্গে এই মেলা পরিচালনা করার কথাও বলেন মমতা (Mamata Banerjee)।

শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা (Poush Mela) ঐতিহ্য গোটা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে পৌষমেলা আয়োজিত হচ্ছিল না। প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হতেই স্বল্প সময়ের মধ্যেই পৌষমেলা আয়োজন নিয়ে নতুন করে তোড়জোড় শুরু হয়। তিন বছর পর এই পৌষ মেলা ঘিরে এবারের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নিতে অপারগ জানিয়ে দিলে এগিয়ে আসে রাজ্য সরকার। সেই বিকল্প পৌষ মেলার সূচনায় আজ উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয়কুমার মল্লিক। সকাল সাড়ে সাতটায় উপাসনায় অংশ নেন তিনি।মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তার পর আনুষ্ঠানিক ভাবে মেলার উদ্বোধনের পর প্রদীপ প্রজ্জলনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দুই প্রবীণ আশ্রমিক ও বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপক সুনীতিকুমার পাঠক ও কল্পিকা মুখোপাধ্যায়। ছাতিমতলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘উদয়ন’ বাড়ি পর্যন্ত বিশেষ পদযাত্রার আয়োজন করা হয়।

করোনার সময় প্রথম বন্ধ হয়েছিল পৌষমেলা। তারপর থেকেই এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল এই মিলন উৎসব। রবীন্দ্র অনুরাগী সকল মানুষ কাঠগড়ায় তুলেছিলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিন বছর পর শান্তিনিকেতনে ফিরিয়ে আনলেন চিরাচরিত পৌষমেলা। মেলা প্রাঙ্গণে সকাল থেকেই ভিড়। শনিবার থেকেই কার্যত মানুষের ঢল নেমেছে শান্তিনিকেতনে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এখানে উদ্যোগের প্রশংসা করছেন প্রত্যেকেই। মুখ্যমন্ত্রীর কথার সুর ধরেই আজ শান্তিনিকেতন তথা রবীন্দ্র প্রেমী মানুষেরা বলছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পৌষমেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত কখনোই গ্রহণযোগ্য ছিল না। তাই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে এনে রবি ঠাকুরকে যথাযথ মর্যাদা দিল বাংলার সরকার।
