নতুন করে রাজ্য রাজনীতির আলোচনায় সোনাচূড়ার ১৬ বছর আগের নিশিকান্ত মণ্ডলের (Nishikanta Mandol) খুনের ঘটনা। তাঁর মৃত্যু দিন ঘিরে বিজেপির অন্দরে আদি-তৎকালের কোন্দল। ২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর যখন খুন হন ভূমির উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির প্রথম সারির নেতা নিশিকান্ত, তখন নন্দীগ্রামে তৃণমূলেই (TMC) ছিলেন বর্তমান বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Shubhendu Adhikari)। এখন গেরুয়া শিবিরের নাম লিখিয়ে নিশিকান্ত জন্য প্রবল দরদ দেখাচ্ছেন তিনি। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করছেন বিজেপি (BJP) নেতাদের একাংশ। কেউ বলছেন, যে দলবদলু নেতা এখন দরদ দেখাচ্ছেন, তাঁর নির্দেশেই সেই সময় গুলি করা হয়েছিল নিশিকান্তকে। আবার কারও মতে, সেই সময়কার স্থানীয় তৃণমূল নেতা (পড়ুন শুভেন্দু অধিকারী) নির্দেশেই মাওবাদীদের দিয়ে নিশিকান্তকে খুন করানো হয়! আর বিজেপির এই কোন্দল নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর কথায়, “খেজুরির বিজেপি বিধায়ক নিশিকান্ত খুনে কার দিকে ইঙ্গিত করছেন? তখন জেলায় কারা চালাতেন? তাঁদের অনেকেই তো এখন বিজেপিতে।”

সোমবার নিশিকান্ত মণ্ডলের মৃত্যুদিনে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন একের পর এক বিজেপি নেতৃত্ব। প্রথমে নন্দীগ্রামে বিজেপি নেতা জয়দেব দাস অভিযোগ করেন, সেই সময় তৃণমূল নেতৃত্বের নির্দেশেই খুন করা হয়েছিল নিশিকান্তকে! সেই সময় এলাকার তৃণমূল নেতা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনিই সেই সময় তৃণমূল সাংসদ। তাহলে কি জয়দেব শুভেন্দুকেই নিশানা করলেন? এই নিয়েই যখন রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল জল্পনা, সেই সময় বোমা ফাটিয়েছেন খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক (Santanu Pramanik)। তাঁর অভিযোগ, “নিশিকান্ত ছিলেন তৃণমূলের কাঁটা। ওঁর কাছে কিছু নেতারা পেরে উঠতে পারেনি। তাই রাতের অন্ধকারে মাওবাদীদের দিয়ে খুন করাল। অথচ আজ আবার ওরাই মালা দিতে আসে। হত্যা করবে আবার সমবেদনাও জানাবে।”

বিজেপি নেতাদের এই আক্রমণকেই হাতিয়ার করে গেরুয়া শিবিরের আদি নাম তৎকালের কোন্দলকে নিশানা করেছে তৃণমূল। শুভেন্দু অধিকারী দলের নেতৃত্বই তাঁকে খুনি বলছে- এই অভিযোগ শাসকদলের। নাম না করে কুণালের (Kunal Ghosh) খোঁচা, “খেজুরির বিজেপি বিধায়ক নিশিকান্ত খুনে কার দিকে ইঙ্গিত করছেন? তখন জেলায় কারা চালাতেন? তাঁদের অনেকেই তো এখন বিজেপিতে।”

রাজনৈতিক মহলের মতে, নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতৃত্ব দলবদলু বিরোধীদলনেতাকে একেবারেই ভরসা করেন না। বরং তিনি তৃণমূলে থাকার সময় বিজেপিকে যেভাবে তিনি নিশানা করতেন-তা এখনও ভুলতে পারেনি আদি বিজেপি নেতৃত্ব। ফলে সেই সময়কার তাঁর বিরুদ্ধে জমে থাকা ক্ষোভ এখন উগরে দিচ্ছেন তাঁরা।

–

–

–

–

–

–