রামচন্দ্র পুরুলিয়ায় এসেছিলেন সীতাকে নিয়ে, জানালেন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো

রামচন্দ্র এই বাংলায় এসেছিলেন পত্নী সীতাকে সঙ্গে নিয়ে !

এই তথ্য আগে কোনওদিন শুনেছেন?
না, আগে কেউই জানতেন না। এই দাবি তুলে গবেষকদের চমকে দিলেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। কী বলেছেন তিনি ?

বিজেপি সাংসদ জানালেন, “ভগবান রাম বনবাসের সময়ে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে এসেছিলেন। সীতার তৃষ্ণা নিবারণের জন্য মাটিতে তির মেরে জলের ধারা বের করেন। সেই স্থান এখন সীতাকুন্ড নামে পরিচিত‌। সবাই রাম সীতার এখানে আসার কথা জানেন।”
কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে নজিরবিহীন এই অনাবিষ্কৃত তথ্য জানিয়েছেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। আর এই চিঠিই বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। রাজ্য সরকার তাঁর সংসদীয় এলাকার মধ্যে থাকা অযোধ্যা পাহাড়ের উন্নয়ন করছে না বলে দিল্লির সাহায্য চেয়ে কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রীকে যে চিঠি দিয়েছেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ, সেখানেই এই কথা লিখেছেন।
নিজের সংসদীয় কেন্দ্রের উন্নয়ন চেয়ে যে কোনও সাংসদই কেন্দ্রের কাছে দাবি জানাতে পারেন। কিন্তু
অযোধ্যা পাহাড়ের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো ওই পাহাড় সম্পর্কে যা বলেছেন, তা নিতান্তই ‘ছেলেমানুষি’ ছাড়া আর কিছুই নয়।

বাংলার মাটিতে রামচন্দ্রের সস্ত্রীক আগমন নিয়ে বিজেপি সাংসদের এই বর্ণনার সঙ্গে ন্যূনতম কোনও ভিত্তি কি, তা জানতে চেয়েছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই। তৃণমূল সরকার তাঁর এলাকার উন্নয়নে উৎসাহী নয় বলে দাবি করে সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতেই পারেন। তা বলে এইভাবে? বিরোধীদের বক্তব্য, অযোধ্যা পাহাড়ের সঙ্গে ইতিহাসের যে মিলের কথা তুলে ধরলেন বিজেপি সাংসদ, তা তাঁর অযোগ্যতার পরিচয়। এই বিষয়ে গবেষকদের বক্তব্য, “রামচন্দ্র বা সীতার বাংলার অযোধ্যা পাহাড়ে আসার কোনও প্রামাণ্য নথি আজ পর্যন্ত কেউ পায়নি। ইতিহাসে আছে মহাবীর পুরুলিয়া এসেছিলেন। কিন্তু রামায়ণ বা মহাভারতের কোনো চরিত্রের এই জেলায় পা পড়েছিল বলে কোনও ভিত্তিই নেই। সম্ভবত এক ভূমিজ রাজার নামেই অযোধ্যা পাহাড়ের নামকরণ হয়েছিল। যথারীতি বিজেপি সাংসদকে কটাক্ষ শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “সাংসদ রাজনীতিতে নতুন বলে অযোধ্যা পাহাড় সম্পর্কে সব খবর জানেন না। 2011 সাল থেকে ধাপে ধাপে প্রচুর উন্নতি হয়েছে। এখন বছরভর এখানে পর্যটক আসছে।”

কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো বলেছেন, “বিজেপির রাজ্য সভাপতি কয়েক মাস আগে অযোধ্যা পাহাড়ে এসে একটি বেসরকারি হোটেলে ওঠেন। পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে বলেই তো তিনি সেখানে রাত্রি বাস করতে পারেন। UPA সরকারের তৎকালীন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী সুবোধ সহায়ের কাছে আর্জি জানানোয় পাহাড়ে উন্নয়নে বরাত এসেছিল। সেকথা বর্তমান সাংসদ জানেনই না। তাঁর ছানা উচিত ছিলো।”

অযোধ্যা পাহাড়ের সঙ্গে রাম-সীতার সম্পর্ক কীভাবে খুঁজে পেলেন বিজেপি সাংসদ, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে পুরুলিয়ায়।

Previous articleমডেলিং জগতে ঢুকতে না পারায় আত্মঘাতী নামী স্কুলের ছাত্রী
Next articleগোলাপি টেস্টে অবশেষে পঞ্চাশের গণ্ডি টপকালেন এক বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান