“মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করবেন, বড়মাকে আমি দেখেছি”: বিজেপিকে তোপ মমতার

একুশের ভোটের বাকি আর মাত্র কয়েকমাস৷ দলকে আরও আন্দোলনমুখী করতে আগামী ৭ ডিসেম্বর থেকে নিজেই পথে নামছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।

“এখন মতুয়া-মতুয়া করছে। অসুস্থ অবস্থায় বড়মাকে কে দেখেছে? হাসপাতালেকে নিয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে বানিয়েছে? তখন কোথায় ছিলেন? এখন মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে? ১৯৭১ সাল, ১৯৪৭ সালে কোথায় ছিলে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় কোথায় ছিলে? উদ্বাস্তু সার্টিফিকেট আমরা করে দিয়েছি। উদ্বাস্তুরা ভালো জায়গায় আছে। ওদের থেকে কিছু শিখব না।”

মঙ্গলবার স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার NRC-CAA বিরোধী চতুর্থ পদযাত্রা শেষে বিজেপির উদ্দেশে এমন প্রশ্নই ছুঁড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এরপরই মুখমন্ত্রী বলেন, “সবাই নাগরিক। আদিবাসী, কামতাপুরি, কীর্তনিয়া, ধামসামাদল যারা বাজাচ্ছে, কৃষক, উদ্বাস্তু, শ্রমিক, মতুয়া সবাই নাগরিক। রাজনীতির স্বার্থে, বিজেপির মাদুলির স্বার্থে ভাগ হবে না। স্বাধীনতার ৭২বছর পর আবার সবাইকে নাগরিকত্ব প্রমান দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে? সবাইকে কি বিজেপির চাকর-বাকর?”

এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “বিজেপি বাংলায় আমাদের গণতন্ত্র শেখাচ্ছে। উত্তর প্রদেশ, দিল্লি থেকে শুরু করে জামিয়া মিলিয়ায় গুলি করছে। বিজেপির হাতে স্টেইন গান রয়েছে। কিন্তু মানুষ শান্তিতে প্রতিবাদ করবে।আমাদের প্রতিনিধিদের ঢুকতেই দেয়নি ওরা। কিন্তু বিজেপির বাবুরা মিছিল করলো এখানে। গাড়ি করে এসেছেন বাবুরা। আমরা আটকাই নি। তাহলে বলুন আইনের শাসন কোথায়?”

গান্ধী ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে গান্ধীজির প্রসঙ্গে টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখান থেকেই গান্ধীজি সারা দেশকে বার্তা দিয়েছিলেন সম্প্রীতি, ঐক্য, স্বাধীনতার। আর আজ আমরা এখন থেকেই শপথ নিচ্ছি, আমরা কেউ দেশ ভাগ হতে দেব না। এই বাংলা আমাদের মাতৃভূমি, পিতৃভূমি, কর্মভূমি। আমাদের এখানে কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প হবে না। NRC হবে না। CAA হবে না। সব জায়গার নির্দিষ্ট ভাষা, সংস্কৃতি আছে। কিন্তু দিনের শেষে আমরা সবাই ভারতীয়। তাই যতক্ষণ কা কা বাতিল না হচ্ছে, ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে। আন্দোলন বন্ধ হয় না।”

এদিন মুখ্যমন্ত্রী ফের আধার কার্ডের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “আধার কার্ড না থাকলে কিছু হবে না বলেছিল। এখন বলছে আধার কার্ড কিছু হবে না। এই আধার দিয়ে মানুষের সব চুরি করে নিয়েছে। চাকরি নেই, কাজ নেই। খালি হিন্দু-মুসলমান করে বেড়াচ্ছে। বিজেপির মাদুলি বিষ মাদুলি। ওই কার্ড যে পড়েছে, সে গোল্লায় গেছে। কে কী পোশাক পড়বে, কে কী খাবার খাবে, সেটাও বিজেপি শেখাবে?”

ফের রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে তৃণমূল নেত্রী সকলকে ভোটার লিস্টে নাম তুলতে বলেন। নাম ভুল থাকলে, তা অবিলম্বে সংশোধন করতে বলেন।

এদিন মমতার ৫ কিলোমিটার পদযাত্রা পথে পুরোটাই ছিল কাঁসর-ঘন্টা, শঙ্খ ধ্বনিতে মুখরিত। ছিল ধামসা মাদল। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রা শিলিগুড়িতে। আর পয়লা জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হবে “নাগরিক দিবস” হিসেবে। ফের জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী।

আরও পড়ুন-মিরাটে বাধার মুখে সোনিয়ার পুত্র-কন্যা

 

Previous articlebig brk: এনপিআরে সম্মতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার, বরাদ্দ ৮৫০০ কোটি টাকা
Next articleআন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন অল-রাউন্ডার ভার্নন ফিলেন্ডার