বোড়ো ত্রিপাক্ষিক শান্তি চুক্তির বিজয় উৎসব উপলক্ষে শুক্রবার অসমের কোকরাঝাড়ে এক ঐতিহাসিক সমাবেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, এই সমাবেশের বিপুল উন্মাদনা দেখে আমি অভিভূত। এখানে যে এত মা-বোনেরা এসেছেন তাঁরাই তো আমার শক্তি! কেউ কেউ আমাকে ডান্ডা মারার কথা বলছেন। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। মা বোনেরাই আমার রক্ষাকবচ। মানুষের ভালবাসাই আমার শক্তি। কোনও ডান্ডা আমার কিছুই করতে পারবে না।

কোকরাঝাড়ের জনতাকে উদ্দেশ্য করে মোদি বলেন, আমি আপনাদের লোক। আমাকে ভরসা করুন, আমার উপর ভরসা রাখুন। স্বাধীন বোরোল্যান্ডের দাবিতে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের উল্লেখ করে মোদি বলেন, শান্তিচুক্তির পর যারা বন্দুক, বোমা, পিস্তল ছেড়ে শান্তির পথে সামিল হতে চাইছেন তাদের কথা ভাবার দায়িত্ব আমার। পুনর্বাসন প্যাকেজের সমস্ত সুবিধা দিয়ে তাদের উন্নয়নের অংশীদার করা হবে। মোদির কথায়, পুরো অসম, গোটা ভারত আপনাদের হৃদয় জিতে নেবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগের দুই চুক্তিতে সব প্রত্যাশা মেটেনি। তাই তৃতীয় যে বোড়ো শান্তিচুক্তি হল তাতে এমন কোনও বিষয় নেই যা বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে বোড়ো টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলের পরিধি বেড়েছে। চুক্তিতে সবাই জিতেছে। সবচেয়ে বড় জিত হয়েছে শান্তি ও মানবতার। আজ যারা অস্ত্র সমর্পণ করছেন তারা আসলে নিজেদের সমর্পণ করছেন শান্তির প্রতি, অহিংশার প্রতি, উন্নয়নের প্রতি।

মোদি বলেন, নিশ্চিন্ত থাকুন শান্তিচুক্তির পর গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলে সর্বাত্মক বিকাশই আমাদের সরকারের লক্ষ্য। বোড়ো ও অন্য সমস্ত জনজাতির নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, বৈশিষ্ট্য, স্বাতন্ত্র্য, অধিকার, সংরক্ষণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। প্রতিটি জনজাতির বৈচিত্র্য রক্ষা করেই গড়ে উঠবে এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত।

সিএএ বা নতুন নাগরিকত্ব আইন লাগু হওয়ার পর অসমের সংস্কৃতি, অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয় পাচ্ছেন যারা, তাদের জানিয়ে দিতে চাই এমন কিছুই হবে না। অসমের স্বার্থ কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আশঙ্কার কোনও কারণ নেই।

মোদি বলেন, এতদিন উত্তর পূর্বাঞ্চলকে সবাই ভোটব্যাঙ্ক হিসাবে ব্যবহার করেছে। আমাদের সরকারের লক্ষ্য, উত্তর পূর্বাঞ্চলের সর্বাত্মক উন্নয়ন ও বিকাশের মাধ্যমে সবার বিশ্বাস অর্জন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও যারা হিংসা আর বোমা-বন্দুকের বিচ্ছিন্নতাবাদী রাস্তায় হাঁটছেন তাদের বলব, আপনারা বোড়ো যুবকদের কাছ থেকে প্রেরণা নিন। কীভাবে হিংসা ছেড়ে উন্নয়নে সামিল হতে হয় দেখিয়ে দিয়েছে উত্তর পূর্বের যুবকরা।

মোদির সঙ্গে গলা মিলিয়ে সমাবেশের জনতা আওয়াজ তোলে ভারতমাতা কি জয়, মহাত্মা গান্ধী অমর রহে।

আরও পড়ুন-‘হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটির ডিগ্রি থাকলে এমনই হয়’, মোদিকে কটাক্ষ কংগ্রেসের
