ভেঙে পড়ার কিছুই নেই, সুদিন আসছে

করোনা আপডেট :৩ এপ্রিল, সকাল ১১ টা। বিশ্ব : আক্রান্ত ১০,১৫,৪৬৬, মৃত ৫৩,১৯০। দেশ : আক্রান্ত ২০৬৯, মৃত ৫৮। রাজ্য : আক্রান্ত ৩৪, মৃত ৩।

কৌশিক পাল

আসুন একটা তথ্যে আলোকপাত করি।

ইতালিয় দৈনিক সংবাদপত্র ‘লা স্তাম্পা’ ও ইতালির ন্যাশনাল হেলথ ইন্সটিটিউট করোনার কারণে মৃতের সংখ্যার (যা প্রচার করা হচ্ছে ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশনের অনুমোদনক্রমে ) ভিত্তিতে একটি বিশ্লেষণ-রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে। তারা সারা দেশে মোট মৃতের একটি বৃহৎ স্যাম্পল (প্রায় ১৮ শতাংশ) সংগ্রহ করে একটি অদ্ভুত বিষয় সামনে নিয়ে এসেছে।

এবার সঙ্গের ছবিটির দিকে একবার লক্ষ্য করুন৷

◾কালো রংয়ের অংশ :

মোট মৃতের সংখ্যার বৃত্তে সবচেয়ে বড় কালো রংয়ের অংশ অর্থাৎ ৪৮.৫ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে মৃতের কোভিড-১৯ আক্রান্ত বহু আগেই ৩টি বা তার বেশি ক্রিটিকাল এবং ক্রনিক অসুখ ছিল।

◾গোলাপি রংয়ের অংশ:

২৫.৬ শতাংশের ক্ষেত্রে অর্থাৎ (গোলাপি রংয়ের অংশে ২টি কঠিন অসুখ আগে থেকেই ছিল,

◾আকাশি রংয়ের অংশ:

২৫.১ শতাংশের ক্ষেত্রে বা আকাশি রংয়ের অংশে দেখানো হয়েছে ১টি কঠিন ও ক্রনিক রোগ ছিল। এই রোগগুলির মধ্যে ক্যান্সার, ক্রিটিকাল লিভার ডিজিজ, প্যানক্রিয়াসের সমস্যা, হাইপার টেনশন, হাই ব্লাড সুগার, পালমোনারি ডিজিজ, ইত্যাদি রয়েছে।

◾হলুদ রংয়ের অংশ:

বৃত্তের হলুদ অংশ দেখাচ্ছে ০.৮ শতাংশ মৃত ব্যক্তি যাদের কোন পূর্ববর্তী অসুখ ছিল না৷ আমি ধরে নিচ্ছি তারা কোভিড-১৯ সংক্রমণেই মারা গিয়েছেন।

প্রশ্নটা হচ্ছে এই ০.৮ শতাংশ কতজন? ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউট অব ইতালি বলেছে মাত্র ৩টি ক্ষেত্রে (ঠিকই পড়েছেন, মাত্র ৩ টি) মৃতের কোন প্রিভিয়াস ডিজিজ ছিল না। আমি যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নিই, এটি মাত্র ১৮ শতাংশ মৃতের উপর করা সমীক্ষা, তাহলেও সারা ইতালিতে জনা ১৫-র বেশি হবে না সংখ্যাটি, যারা পুরোপুরি কোভিড-১৯ সংক্রমণেই মারা গিয়েছেন। পরীক্ষাটি ১৭ মার্চ করা হয়েছে৷ আমি ধরে নিচ্ছি, আরও দু’ গুণ হয়ে সংখ্যাটা আজ ৫০ হয়েছে। অর্থাৎ ইতালির মতো ৬ কোটি জনসংখ্যা বিশিষ্ট দেশে, যেখানে সংক্রমন ‘অতি মারাত্মক’ পর্যায়ে চলছে, সেখানে ৫০ জন মারা গিয়েছেন, যারা নীরোগ শরীরের অধিকারী ছিলেন এবং এটা সর্বোচ্চ সম্ভাবনা।

দেখুন, এই প্রজন্মের ইতিহাসে এ ধরনের পৃথিবীব্যাপী সংক্রমণের স্মৃতি নেই। লকডাউনে কেউই অভ্যস্ত নয়। কিন্তু আপনাদের অনুরোধ এটুকুই যে পাশের লোকটিকে মনোবল দিন, নিজের মনোবল বাড়ান। কেউ কেউ সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য ফেসবুকে লাইভ করে প্যানিক ছড়াচ্ছেন, কেউ গালাগালি দিচ্ছেন, কেউ উপসর্গ চেপে রাখছেন। এগুলি কোনটাই কাম্য নয়। আমি বারংবার দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এত ভেঙে পড়বেন না, সুদিন আসছে। সিনেমা দেখুন, গল্প করুন, আগামীর মানুষদের কাছে এই অভিজ্ঞতা বলার জন্য প্রস্তুত হন।

আপনার প্রতিবেশীটির ঘরে হাঁড়ি চাপল কিনা খোঁজ নিন, না চাপলে সাহায্য করুন। সরকারি উপদেশ মেনে চলুন। উপসর্গ দেখা দিলে সোজা হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।
পৃথিবীতে চিরদিন কিছুই নয়, কেউই নয়…

মেক ইট লার্জ!

(সঙ্গের ছবিটি ব্লুমবার্গ ডট কমের সৌজন্যে প্রাপ্ত)

Previous articleপ্রশাসনিক ঘোষণা নয়, জনশক্তি প্রকাশের ডাক মোদির, আশাহত দেশবাসী
Next articleপাইকারের অভাবে জমিতে পড়েই নষ্ট তরমুজ