বিশ্বব্যাপী লকডাউনে কমেছে দূষণ, বন্ধ হতে শুরু করেছে ওজোন স্তরের বিশাল গর্ত !

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে বিশ্বব্যাপী লকডাউনে কমেছে দূষণ। কলকারখানা, যানবহন বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ কমেছে। আর এতে ওজোন স্তরের বিশাল গর্ত বন্ধ হতে শুরু করেছে।
মঙ্গলবার সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানায়, বায়ু দূষণের ফলে ওজোন স্তরে ১ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটারের একটি বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল। টানা লকডাউনে কার্বন নিঃসরণ কমে যাওয়ায় গর্তটি বন্ধ হতে শুরু করেছে।
কোপারনিকাসের বায়ুমণ্ডল নিরীক্ষণ পরিষেবার (সিএএমএস) এক দল বিজ্ঞানী গর্তটি আবিষ্কার করেছিলেন। তারা গত সপ্তাহের শেষের দিকে বলেন, ওজোন স্তরের এই বিশাল গর্তের জন্য মানুষের ক্রিয়াকলাপই দায়ী। আর মানুষ নিজেই নিজেদের বিপদ ডেকে নিয়ে এসেছিল। তবে আশার কথা হলো- বিশ্বব্যাপী লকডাউনে ওজোন স্তরের এই বিশাল গর্ত বন্ধ হতে শুরু করেছে। গর্তটি বিশাল ছিল— প্রায় ১১ মাইল বিস্তৃত পথ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্যে পাওয়া যায়।
সম্প্রতি নাসার একটি গবেষণায় ধরা পড়েছে, গত ৩০ বছরে ওজ়োন স্তরের ক্ষত অনেকটাই সেরেছে। ওজোন স্তরের স্বাস্থ্যের কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরের ভাগে, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোন গ্যাসের এই চাদরটি খুবই পাতলা। কিন্তু এই চাদরের কাজ গুরুত্বপূর্ণ।সূর্যের আলো বা তাপ দিব্যি ঢুকতে পারে এই চাদর ভেদ করে। শুধু আটকে যায় সূর্য থেকে আসা ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি। মহাজাগতিক রশ্মির কু-নজর থেকেও পৃথিবীকে বাঁচায় ওজ়োনের এই পাতলা পর্দা।
২০০০ সাল থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ বর্গকিলোমিটার পরিমাণ কমেছে ওজোনের ফুটো। তবে ওজোন স্তরের ওই ছিদ্র মরসুম বিশেষে বাড়ে-কমে।
কিন্তু এখন ওজোন স্তরের গর্ত বুজে আসার কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর পিছনে মূলত কারণ হচ্ছে সিএফসি গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করা। ১৯৮৭ সালে মন্ট্রিয়াল প্রোটোকলে এই সমঝোতা হয়েছিলো। এবং তারপর থেকেই পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন ওজোন স্তরের এই ক্ষত মেরামতির আরও একটা কারণ আছে। উষ্ণ ও শীতল বায়ুর সংঘাতে তৈরি মেরু ঘূর্ণাবর্ত (Polar Vortex) সিএফসি গ্যাসের সঙ্গে মিশে এমন স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক মেঘ তৈরি করে যা ওজোনের পর্দাকে দুর্বল করে দেয়। এই সিএফসি গ্যাসের পরিমাণ কমায় ঘূর্ণাবর্তের ক্ষমতাও অনেক কম। উষ্ণ ও শীতল বায়ুর সংঘাত হলেও তার সঙ্গে রাসায়নিক গ্যাস মিশছে না, ফলে ওজোন স্তরের ক্ষতিও সেভাবে হচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জৈব ও রাসায়নিক দূষণের দাপট কমায় ক্লোরোফ্লুরোকার্বন কম নির্গত হচ্ছে বাতাসে। যার প্রভাব পড়েছে জলবায়ুতেও। ফলে ধীরে ধীরে সেরে উঠেছে ওজোন স্তরের ক্ষত।

Previous articleসেম-সাইড গোল রাজ্য বিজেপির, দিলীপদের স্ট্রেইট ব্যাটে বাউন্ডারির বাইরে ফেললেন অভিষেক!
Next articleলকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে এটা কি প্রাপ্য ছিল পুলিশের? জনতার হাতে এইভাবে নিগ্রহ আর গাড়ি ভাঙচুর!