২২ দল একমত : করোনা প্রতিরোধে নীতিহীন কেন্দ্র, আমফানকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার দাবি

কেন্দ্রীয় সরকার গরিব মানুষের দুর্দশার প্রতি সমব্যথী নয়। বরং করোনাকে সামনে রেখে একটার পর সংস্থাকে বেচে দিচ্ছে। বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ভিডিও বৈঠকে চাঁচাছোলা ভাষায় এই কথাই বললেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। ডাক ছিল সোনিয়া গান্ধীর। ডেকেছিলেন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে নবান্নে ফিরেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও এই বৈঠকে অংশ নেন। তবে বৈঠকে সারাক্ষণ থাকতে পারেননি তৃণমূলনেত্রী। তাঁর হয়ে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন বৈঠকে একদিকে কোভিড প্রতিরোধ, অন্যদিকে আমফানের ত্রাণ- পুনর্গঠন নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন।

শুক্রবারের এই বৈঠকে কিছুটা হলেও সুর কেটে দেন সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদব, বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অনুপস্থিতি। তিনটি দলেরই কংগ্রেসের সঙ্গে অম্ল-মধুর সম্পর্ক অবশ্য সকলের জানা। এরা কোনও প্রতিনিধিও বৈঠকে পাঠাননি। অন্যদিকে সদ্য বিজেপি জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসা উদ্ধব ঠাকরের উপস্থিতি বিরোধী জোটকে নিশ্চিতভাবে নতুন করে অক্সিজেন দিয়েছে।

বৈঠকে সোনিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শুরুতে বলেছিলেন ২১দিনে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই শেষ হবে। মানুষের মনে আশা জেগেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর হিসাব যে সম্পূর্ণ ভুল তা আজ প্রমাণিত হচ্ছে। বরং মানুষের বুঝতে পারছে টিকা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ভাইরাস থেকে যাবে। এই পরিস্থিতি থেকে কীভাবে বের হওয়া যাবে, সে ব্যাপারে স্বচ্ছ কোনও ধারনাই নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। এদিনের বৈঠক থেকেই কংগ্রেস সভানেত্রী আমফান বিপর্যয়ের প্রসঙ্গটি তোলেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব হয় — আমফানকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলিকে অবলম্বে সাহায্য করতে হবে।

বৈঠকে ২২টি বিরোধী রাজনৈতিক দল যোগ দেয়। তৈরি হয়েছে ১১দফা দাবি…

১. প্রত্যেকটি গরিব মানুষকে আগামী ৬ মাসে ১০ কেজি করে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দিতে হবে। মনরেগা ২০০ দিনের কর্মদিবস তৈরি করতে হবে

২. পরিযায়ী শ্রমিকদের বিনা খরচে বাড়ি পৌঁছে দিতে হবে

৩. বিদেশে থাকা পড়ুয়া, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের দেশে ফেরাতে হবে

৪. করোনা সংক্রমণ রুখতে নমুণা পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জোর দিতে হবে

৫. শ্রম আইনবিরোধী একতরফা আইন অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে

৬. রবি ও খরিফ শস্যের জন্য কৃষকদের সরকারি সাহায্য বাড়াতে হবে

৭. মহামারি মোকাবিলায় রাজ্যগুলিকে বাড়তি বরাদ্দ বা প্যাকেজ দিতে হবে

৮. লকডাউন থেকে বের হওয়ার জন্য কেন্দ্রকে জাতীয় পরিকল্পনা করতে হবে

৯. সংসদের কার্যকলাপ ফিরিয়ে আনতে হবে

১০. কুড়ি লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজ পুনরায় ঢেলে সাজাতে হবে

১১. ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরু করার আগে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে

Previous articleনিজের কেন্দ্রেই ঢুকতে পারলেন না সাংসদ! জানেন তিনি কে!
Next articleঅনিচ্ছাসত্ত্বেও অবশেষে মাস্ক পরতে বাধ্য হলেন ট্রাম্প!