করোনা- আবহে দেশের নির্বাচনী প্রচারেও ১০০% বদল আসছে

করোনা-কারণে এই মুহুর্তে দেশে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ৷ দেশজুড়ে বহাল লকডাউন এবং সোশ্যাল-ডিসট্যান্সিং৷ আজ বা কাল নিশ্চিতভাবেই দেশ লকডাউন মুক্ত হবে৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞদের স্পষ্ট ঘোষণা, ভয়ঙ্কর এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় ‘সামাজিক দূরত্ব’ বিধি বজায় রাখা৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, এই মহামারি নিয়েই আগামীদিনে ঘর করতে হবে৷ তাই আগামীদিনেও যে সোশ্যাল- ডিসট্যান্সিং বিধি দেশজুড়ে বহাল থাকবে, তা এক রকম নিশ্চিত৷

এদিকে একাধিক রাজ্যে নির্বাচনের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে৷ এ রাজ্যেও কলকাতা পুরসভা-সহ শতাধিক পুরসভার ভোট বকেয়া৷ করোনার প্রকোপ দেখা না দিলে এতদিন এই ভোট মিটে যেত৷ ওদিকে
আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে হওয়ার কথা বিহার বিধানসভার নির্বাচন। মধ্যপ্রদেশের ২৪ বিধানসভা আসনেও হওয়ার কথা উপ-নির্বাচন৷ এই উপ-নির্বাচনেই স্থির হবে বিজেপির ভবিষ্যৎ৷

করোনা আবহে ভাইরাসের প্রকোপবৃদ্ধির শঙ্কা নিয়ে এবং সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে কীভাবে ভোটের প্রচার চলবে? এই চিন্তায় আপাতত ডুবে রাজনৈতিক দলগুলি৷
যে কোনও নির্বাচনী প্রচারের বড় হাতিয়ার সমাবেশ, জনসভা, মিছিল। কিন্তু করোনা ঠেকাতে এই ধরনের প্রচার নিষিদ্ধ হতে পারে৷
তাহলে প্রচার কীভাবে করা হবে?

সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনও এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে৷
প্রার্থী বা দলগুলিকে যদি
বাড়ি থেকেই প্রচার করতে হয়, তাহলে সেই মতো নতুন বিধি তৈরি জরুরি৷ কমিশন সেই খসড়া করার কাজ শুরু করেছে৷ সেই বিধি মেনেই প্রস্তুতি নিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে, প্রার্থীদের।

জানা গিয়েছে, নতুন প্রচার ধারায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে সোশ্যাল মিডিয়া৷
রাজনৈতিক দলগুলির ও প্রার্থীদের ভোট প্রচারে প্রধান হাতিয়ারই হবে সোশ্যাল মিডিয়া। বিজেপির উদ্যোগে ইতিমধ্যেই এক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে৷ এই অভিনব পরিকল্পনার মাধ্যমেই আগামী দিনের নির্বাচনে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, বুথভিত্তিক 7 জন কর্মী নিয়ে একটি করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং ফেসবুক গ্রুপ গঠন করা হবে। এই গ্রুপের মাধ্যমেই বিজেপি তাদের প্রচার চালাবে বলে জানা গিয়েছে৷ বিজেপির নেওয়া পথ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি
অনুসরণ করবে কিনা, তা এখনও জানা যায়নি৷

নতুন এই নির্বাচনী প্রচার নিয়ে ভোট-বিশেষজ্ঞদের অভিমত, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভোটের প্রচার শুরু করে, নিশ্চিতভাবেই ভোটের অংক, ভোটের কৌশল বদলে যাবে৷ রাজনৈতিক মহলের ধারনা, অতীতে যে কোনো নির্বাচনের আগে কোনো রাজনৈতিক দলের মিছিল বা সমাবেশ দেখে অনুমান করা যেত যে, সেখানে কি রকম নির্বাচন হতে চলেছে, কাদের পাল্লা ভারী। নতুন বিধিতে সেই পথ বন্ধ হতে চলেছে৷ এবার যদি বাড়ি বসেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বেশি প্রচার করা হয়, তাহলে সেভাবে জন-মনের আভাসও পাওয়া যাবে না, বোঝা যাবেনা, কোন দলের পাল্লা ভারী। তা জানা যাবে একেবারে ফল ঘোষণার পর৷

সব মিলিয়ে করোনা এবার নির্বাচনী প্রচারেও
প্রভাব বিস্তার করতে চলেছে৷ রাজনৈতিক দলগুলিকেও নতুন ধারায় ঘর গোছাতে হবে৷

Previous articleকরোনা সংক্রমণের ভয় বেশি স্থূলদের? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
Next articleকরোনাভাইরাস রুখতে পারে গাঁজা! দাবি বিজ্ঞানীদের