আজ ‘বিশ্ব সাইকেল দিবস’, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাফেরা করতে ভরসা শুধুই সাইকেল

চমকে গেলে চলবে না, আজ, ৩ জুন, ‘বিশ্ব সাইকেল দিবস’৷

দু’চাকার এই পরিবেশ বান্ধব যানের প্রয়োজনীয়তা এবং উপকারিতার কথা ভেবেই ২০১৮ সালে রাষ্ট্রসঙ্ঘ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এবার থেকে ওয়ার্ল্ড বাইসাইকেল ডে বা বিশ্ব বাইসাইকেল দিবসও পালিত হবে। অজস্র মানুষ সাইকেল চালান। কিন্তু তাঁদের অনেকেই সাইকেলের জন্য বরাদ্দ এই বিশেষ দিনের কথা জানেন না।

বিশ্বের সাইকেলপ্রিয় মানুষের জন্য ৩ জুন একটি বিশেষ দিন। ২০১৮ সালে বিশেষভাবে দিনটি পালন করতে প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল রাষ্ট্রসংঘ। রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রস্তাবে সাইকেলের দীর্ঘ জীবনকাল এবং বহু কাজে ব্যবহৃত হওয়ার উল্লেখ করা হয়েছিল। কম খরচ, বিশ্বাসযোগ্য এবং পরিবেশের জন্য উপযুক্ত যানবাহনের মাধ্যম হিসেবে সাইকেল আজও বিকল্পহীন৷ সাইকেল ব্যবহারের সুফলের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য মূলত এই দিবস উদযাপন করা হয়।
দেশের অন্য শহরে এমন কোনও সংগঠন না থাকলেও কলকাতায় একটি সংগঠন আছে, যার নাম “কলকাতা সাইকেল সমাজ”৷ এই সংগঠনটি গত ৩ বছর ধরেই ‘বিশ্ব সাইকেল দিবস’ পালন করে চলেছে। ভারতে সাইকেলকে বরাবরই নিম্নশ্রেণির যান হিসেবেই দেখা হয়। অথচ বেলজিয়াম, চিন, সুইজারল্যান্ড, জাপান, নরওয়ে, জার্মানি, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস ও মার্কিন মুলুকে সাইকেল অত্যন্ত জনপ্রিয়। এমনকী অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাও সাইকেল চালান।
সারাবিশ্বে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ ও বয়স নির্বিশেষে পালন করা হয় এই ওয়ার্ল্ড বাইসাইকেল ডে। এবছর করোনা পরিস্থিতির জেরে থমকে গিয়েছে সমস্ত খেলা, প্রতিযোগিতা এবং উৎসব। তার মধ্যেও নিয়ম মেনে পালিত হচ্ছে দিনটি৷
এখন অনেক মানুষ শখে সাইকেল চালান। শহরের দিকে তেমন সাইকেল না দেখা গেলেও গ্রাম-মফস্বলের দিকে বহু মানুষেরই ভরসা এই দু’চাকার যান।

করোনা-লকডাউন পরিস্থিতিতে ‘সামাজিক দূরত্ব’ বিধি মেনে চলাফেরা করতেও সাইকেল বিকল্পহীন৷ অনেক পরিযায়ী শ্রমিক এই সাইকেলকে সঙ্গী করেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছে৷ কেউ ১০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আবার কেউ ৩৫০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন রাস্তায়। করোনা-সংকটকালে সাইকেলের গুরুত্ব আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
ডাক্তারদেরও পরামর্শ, সুস্থ থাকার জন্য করতে হবে সাইক্লিং বা চালাতে হবে সাইকেল। সাইকেল চালানো বিশ্বস্তরে স্বীকৃত জনপ্রিয় খেলাও বটে৷
পরিবেশ দূষণ রোধ করতেও একমাত্র ভরসা বাইসাইকেল-ই৷

ওদিকে “কলকাতা সাইকেল সমাজ”
সাইকেল নিয়ে ‘কাজ’ করেই চলেছে৷ এই শহরে সুস্থ সাইকেল মনস্ক পরিবেশ গঠনের স্বপ্ন দেখে তারা। সাইকেল সমাজের এ বছরের বক্তব্য, “এই মুহুর্তের করোনা আবহে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাতায়াত করার একমাত্র উপায় দু’চাকার যান৷ আর সাইকেলের থেকে সস্তায় এই সুবিধা আর কোথায় মিলবে? এমনিতেই কলকাতায় বায়ু দূষণের মাত্রা অনেকটাই বেশি৷ লকডাউনের কারনে যান চলাচল কম, তাই দূষণমাত্রা এখন কিছুটা কমলেও, অচিরেই তা বৃদ্ধি পাবে৷ সাইকেলের মতে পরিবেশবান্ধব যান আর একটাও নেই।

সাইকেল সমাজের দাবি, সরকারি উদ্যোগে রাস্তায় সাইকেল লেন বা সাইকেলের জন্য প্রতিটি মেট্রো স্টেশনের সামনে গ্যারেজ বা স্ট্যান্ড করে দেওয়া হোক। তাতে অফিস যাত্রীরাও সাইকেলে যাতায়াত করতে পারবেন। এই দাবি জানিয়ে সাইকেল সমাজের তরফে এদিনই এক ‘খোলা চিঠি’ দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷

Previous articleপরিবহনের অসুবিধায় কর্মস্থলে পৌঁছতে দেরি হলে আগামী একমাস সরকারি কর্মীদের হাজিরায় লালকালি পড়বে না
Next articleকরোনায় প্রাণ হারালেন উহানের চিকিৎসক