মমতা বুঝিয়েছেন, কিসের রাষ্ট্রপতি শাসন? রাজ্যে ঠিক সময়েই ভোট হবে

বিজেপি’র কেন্দ্রীয় তথা রাজ্যস্তরের নেতৃত্ব ইদানিং এ রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের হুমকি অথবা ইঙ্গিত দেওয়ার মাত্রা শতগুণে বাড়িয়েছেন৷ তবে সে সব যে তিনি ধর্তব্যের মধ্যেই আনছেন না, একুশের ভার্চুয়াল বক্তৃতায় তা স্পষ্টভাবেই বুঝিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

মমতা তাঁর বক্তৃতায় একাধিকবার বলেছেন,
‘২০২১ সালের মে মাসের নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয় হবে তৃণমূলের। তার পরে ২১ জুলাই বৃহত্তম সমাবেশ হবে।” দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের মেয়াদ শেষ হবে আগামী মে মাসে৷ ভোট হওয়ার নির্ধারিত সময়ও তখনই৷ সে কারনেই বক্তব্যে জোর দিয়েছেন, মে মাসে ভোটের উপর৷ এর অর্থ ঠিক সময়েই ভোট হবে, রাষ্ট্রপতি শাসনের কোনও প্রশ্নই নেই৷

ঠিক এভাবেই কার্যত কেন্দ্র ও কেন্দ্রের শাসক দলের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মমতা বুঝিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি শাসনের হুমকি দিয়ে লাভ নেই, তিনি তৈরি৷ তৃণমূলের এই মুহুর্তের পাখির চোখ যে আসন্ন বিধানসভা ভোট, এদিন তা স্পষ্টভাবেই বুঝিয়েছেন নেত্রী, এবং একইসঙ্গে বিজেপিকে বার্তা দিয়েছেন, ভোট হবে নির্ধারিত মে মাসেই৷ আর সেই ভোটে বিজেপির জামানত বাজেয়াপ্ত করার আহ্বানও জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পরবর্তী বিধানসভা ভোটের আগে এই ২১-এর সভা-ই ছিলো শেষ একুশের সভা৷ সভা ভার্চুয়াল হলেও সমান তেজে সরব ছিলেন মমতা৷ বক্তব্যে ভোটের বাদ্যি বাজিয়েছেন মমতা। কোনও রাখঢাক না-করেই এ দিনের তোপ দেগে বলেছেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলতে অনেকে ভয় পায়। কাল থেকেই আমার বিরুদ্ধে হয়তো অত্যাচার হবে। আমি ভয় পাই না। বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছি। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে বলে গায়ের জোর দেখাচ্ছে।’’ নেত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘‘আমাদের এত দুর্বল ভেবে লাভ নেই। আহত বাঘ বেশি বিপজ্জনক।’’
তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিজেপি ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতির কাছেও দরবার করেছে৷ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন৷ এসবের তাৎপর্যপূর্ণ জবাবও এদিন দিয়েছেন মমতা৷
বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিজেপির অভিযোগের প্রসঙ্গে পাল্টা কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলে মমতা বলেছেন, ‘‘দিল্লির সরকার চক্রান্তের অংশীদার হয়ে কাজ করছে৷ মমতা প্রশ্ন
তুলে বলেছেন, ‘‘বাংলায় আইনশৃঙ্খলা নেই? তা হলে কোথায় আছে? দিল্লিতে আছে? উত্তরপ্রদেশে আছে? সেখানে তো এনকাউন্টার চলছে। জঙ্গলরাজ চলছে৷ থানায় ডায়েরি করতে যাওয়ার আগেই খুন করে দেওয়া হচ্ছে! পুলিশকে যে খুন করল, তাকেও খুন করে দেওয়া হল। কেন? বিহার, অসম, ত্রিপুরায় কেমন সরকার চলছে?’’

মোটের উপর এদিন মমতা বুঝিয়েছেন, রাজ্যে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে এবং বুঝিয়েছেন, রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের চেষ্টা হলে ফল ভালো হবে না৷ এই বার্তা নিশ্চিতভাবেই দিল্লিকে নতুনভাবে ভাবাতে পারে৷

Previous article ভাইরাসে মৃত্যু ২৮ হাজার! স্পেনকে পিছনে ফেলে সাত নম্বরে ভারত
Next articleবিজেপির বিশেষ বৈঠক: দিল্লি গেলেন দিলীপ, রাহুল