নেই হু’এর ছাড়পত্র, সাধারণের হাতের নাগালে রাশিয়ার ‘স্পুটনিক ফাইভ’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে পাত্তাই দিচ্ছে না রাশিয়া। হু’এর কাছ থেকে এখনও মেলেনি ছাড়পত্র। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য সুখবর। রাশিয়ার তৈরি করোনা প্রতিষেধক ‘স্পুটনিক ফাইভ’ এখন একেবারে মানুষের হাতের নাগালে।

রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, ‘স্পুটনিক ফাইভ’এর প্রথম ব্যাচ সাধারণ নাগরিকের জন্য আনা হয়েছে খোলাবাজারে। আর কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে এলাকাভিত্তিক ডেলিভারিও।” দ্রুত এই টিকা বহু নাগরিকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে বলেও আশাবাদী রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রক।

কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যাকসিনে ছাড়পত্রই দেয়নি। আমেরিকা-সহ একাধিক দেশের অভিযোগ, কোনও নিয়ম না মেনেই নিজেদের ক্ষমতা প্রকাশ করতে চাইছে পুতিনের দেশ। তবে অন্যান্য দেশের কথায় কান না দিয়ে রাশিয়া উৎপাদন শুরু করেছিল ভ্যাকসিন। সোমবারই ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ সাধারণ নাগরিকদের জন্য বাজারে আনা হয়েছে।

‘স্পুটনিক ফাইভ’ এই প্রতিষেধকটি তৈরি করেছে গামালিয়া সাইন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজি এন্ড মাইক্রোবায়োলজি। এই ইন্সটিটিউটটি ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেসমেন্ট ফান্ডের সঙ্গে হাত মিলিয়ে।

ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের দাবি অনুসারে, এটাই বিশ্বের প্রথম কার্যকরী অতিমারির ভ্যাকসিন। তবে এর কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে বিশ্বের একাধিক দেশ।

গত শুক্রবারই সায়েন্স জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’ প্রতিষেধকটির প্রথম ট্রায়ালের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনেছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, করোনা টিকার প্রাথমিক পর্যায়ের ট্রায়ালের অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সফল ‘স্পুটনিক ফাইভ’।

রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, গামালিয়া সাইন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজি এন্ড মাইক্রোবায়োলজির তৈরি অতিমারি ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ গুণগতমান সংক্রান্ত সমস্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এবং তা এখন সাধারণ মানুষের জন্য বাজারে আনা হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই মস্কোর বেশিরভাগ নাগরিক এই ভ্যাকসিন পেয়ে যাবে বলে আশাবাদী স্থানীয় প্রশাসন।

করোনাভাইরাসের টিকা তৈরিতে সারা বিশ্বের দু’শোটির মতো গবেষণা চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে তার মধ্যে প্রায় হাফ ডজন গবেষণা পৌঁছে গিয়েছে পরীক্ষার একেবারে শেষ পর্যায়ে। এসব গবেষণার তিনটি চলছে চিনে। একটি যুক্তরাজ্যে। একটি যুক্তরাষ্ট্রে এবং আরেকটি জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ প্রচেষ্টায়। সাধারণত একটি টিকা তৈরি করতে কয়েক বছর সময় লেগে যায়। কিন্তু বর্তমানে অতিমারি পরিস্থিতিতে সব দেশেই এই টিকা উদ্ভাবনের ব্যাপারে তাদের গবেষণায় গতি বাড়িয়েছে।

এখন রাশিয়ার পক্ষ থেকে ‘স্পুটনিক ফাইভ’ নামের একটি টিকা তৈরীর ঘোষণা করার পর একাধিক দেশের মধ্যে প্রশ্ন, যে টিকা তৈরীর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কোন শর্টকাট পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে কিনা।

আরও পড়ুন- ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়ালে অংশই নেয়নি রাশিয়া : হু

Previous articleগরিব কল্যাণ রোজগার অভিযানে পুরুলিয়ার নাম অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ হাইকোর্টের
Next articleকর্মীদের বিক্ষোভের মুখে মঞ্চ ছেড়ে ‘পালালেন’ রেলমন্ত্রী