গাছের সঙ্গে বিবাহ বার্ষিকী! ব্রিটেনের মহিলার কাণ্ডে অবাক বিশ্ব

১৯৭৩ সাল। গাছকে আলিঙ্গন করে চিপকো আন্দোলনের নেমেছিলেন ভারতের উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দারা। ২০২০ সাল। বৃক্ষ স্বামীর সঙ্গে ধুমধাম করে প্রথম বিবাহ বার্ষিকী পালন করলে ব্রিটেনের মহিলা কেট কানিংহাম। দুই দেশের দুই ঘটনা। তবে, উদ্দেশ্য একটাই। শিল্পায়নের, উন্নয়ন, নগরায়নের নামে সবুজ ধ্বংসের হাত থেকে প্রকৃতিকে বাঁচানো।

সম্প্রতি এল্ডার গাছের সঙ্গে ধুমধাম করে বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করে খবরের শিরোনামে ব্রিটেনের মহিলা কেট কানিংহাম।বছর খানেক আগে এই গাছকেই বিয়ে করেছিলেন তিনি। ফুলের পোশাকে সেজে অন্তর থেকে বৃক্ষ স্বামীকে গ্রহণ করেছিলেন। ভারতেও মহিলাদের গাছের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার রীতি আছে। তবে তার সঙ্গে জড়িয়ে কিছু প্রথা, কিছু বিশ্বাস। মেয়ে মাঙ্গলিক হলে তাঁর স্বামীর মৃত্যুযোগ থাকে, এমন ধারণা থেকেই দোষ কাটাতে অনেক সময় মেয়েকে গাছের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। তবে কেটের ক্ষেত্রে কাজ করেছে মহত্ উদ্দেশ্য। ঘরে কেটের দুই সন্তান। রয়েছেন প্রেমিকও।

আরও পড়ুন : ইচ্ছে থাকলেই দুর্গাপুজোর ভোগ পৌঁছবে বাড়ির দোরগোড়ায়! মাত্র ২১ টাকায়

তবু কেন গাছের সঙ্গে বিয়ে করেছিলেন মহিলা?  কেনই বা বিবাহবার্ষিকী! শুধুই কি প্রচারের আলো পাওয়ার জন্য?

বিষয়টা আসলে তা নয়। ৩৮ বছরের মহিলা জানান, রিমরোজ উপত্যকায় বাড়ি তাঁর। এখানকার সবুজ প্রকৃতিকে তিনি খুব ভালোবাসেন। কিন্তু সেই গাছে কাটা পড়ছিল উন্নয়নের নামে। রাস্তা তৈরির জন্য কেটে ফেলা হচ্ছিল উপত্যকার পার্কের গাছগুলি। পরিবেশ বাঁচাতে কী করবেন সেটাই ভাবছিলেন কেট। ভাবতে ভাবতেই এসে দাঁড়িয়েছিলেন একটি এল্ডার গাছের সামনে। স্নিগ্ধ-সবুজ-সুন্দর গাছের নীচে এসে দাঁড়াতেই তাঁর মনে ভরে গিয়েছিল প্রশান্তিতে। তখনই তিনি ঠিক করেছিলেন, বিয়ে করবেন এল্ডার গাছটিকে। স্ত্রী হিসেবে গাছের সঙ্গে সুখে-দুখে থাকবেন পাশে।

কেট  গাছ বাঁচাতে ভারতে হওয়া চিপকো আন্দোলনের কথা শুনে ছিলেন কিনা জানা নেই। উত্তরাখণ্ডে শিল্পায়নের নামে ১০০টা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা গাছ কাটতে দেবেন না বলেই গাছগুলোকে দুই বাহুতে জড়িয়ে ধরেছিলেন। অদ্ভুত ব্যাপার কেটও এত বছর পর সবুজ বাঁচাতে অভিনব পদক্ষেপই করলেন।

২০১৯ সালে গাছকে বিয়ের করে তিনি হন কেট এল্ডার। সপ্তাহে অন্তত চার থেকে পাঁচ বার এল্ডার গাছটির সঙ্গে একান্ত সময় কাটান কেট। এবারে যখন তাঁর ধুমধাম করে বিবাহ বার্ষিকী হচ্ছিল গাছের সঙ্গে, তখন সেখানে ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা। তবে সন্তান বা প্রেমিক কে নিয়ে আসেনি সেখানে। কারণ জিজ্ঞাসা করায় কেটের উত্তর, এটা তাঁ সন্তানদের মানতে হয়তো অসুবিধা হত। আর প্রেমিকা ঘরে রেখে এসেছিলেন বাচ্চাদের দেখভালের জন্য।

কেট জানান, সবুজ রক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে এল্ডার গাছের সঙ্গে তাঁর বিয়ের বন্ধন। আর যতদিন বাঁচবেন স্ত্রী হিসাবে গাছ স্বামীর প্রতি তার কর্তব্য পালন করে যাবেন।ত্রুটি রাখবেন না কোনও।

Previous articleঅনুমতি নেই, বাগবাজার ঘাটে বিজেপির শহিদ তর্পণের মঞ্চ খুললো পুলিশ
Next articleঅনুব্রত-সহ রাজ্যের এক মন্ত্রীকে এনকাউন্টারের হুমকি বিজেপি নেতার