বিহারের ‘ক্যানেল ম্যান’ লঙ্গির পুরস্কার, ট্রাক্টর দিচ্ছেন আনন্দ মহিন্দ্রা

গ্রামে জল আনতে ৩০ বছর ধরে একলা খাল কেটে যাওয়া বিহারের বাসিন্দা লাউঙ্গি ভুঁইয়ার পাশে এবার দাঁড়ালেন মহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মহিন্দ্রা। একার চেষ্টায় একটা গ্রামকে শস্য শ্যামলা করার যে কঠিক লড়াইয়ে তিনি ব্রতী হয়েছিলেন, তার পুরস্কার স্বরূপ তাঁকে দেওয়া হল ট্রাক্টর।

বাস্তবে এমন কিছু হয় যা সিনেমাকে হার মানায়। হয়ে ওঠে সিনেমার রসদ। তেমনই কাহিনি বিহারের গয়া জেলার প্রত‍্যন্ত গ্রাম কোঠিলওয়ার লঙ্গি ভুঁইয়ার। পাহাড় জঙ্গল ঘেরা কোঠিলওয়া গ্রামের জলাভাব দূর করতে একা ৩ কিমি‌ খাল কেটেছেন লাইঙ্গি। তাঁকে প্রথমে সকলে পাগল বলেছিল। ঠিক যেমন, এই বিহারের গয়া জেলার গেহলর গ্রামের দশরথ মাঝি বহু বছ আগে করেছিলেন।গ্রামে রাস্তা তৈরি করতে বছরের পর বছর ধরে একা হাতুড়ি দেয় পাহাড় ভেঙেছিলেন তিনি। যা নিয়ে সিনেমা হয়েছে।

অদম্য ইচ্ছেশক্তির কাছে যে কোনও বাধাই বাধা নয় দেখিয়েছেন লঙ্গি। আর তার পুরস্কার বাবদ আনন্দ মহিন্দ্রা তাঁকে দিচ্ছেন ট্রাক্টর।‘ক্যানেল ম্যান’-কে  সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি।

আরও খবর : এবার করোনা আক্রান্ত ৫৪ জন সন্ন্যাসী, ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ বেলুড় মঠ

৩০ বছর ধরে কোদাল চালিয়ে খাল কাটতে কাটতে তাঁর বয়স বেড়েছে। গ্রামে জল আসার পর খুশিতে ডগমগ লঙ্গির শুধু এটাই আপশোস। বুঝতেই পারেননি কখন এতগুলো দিন কেটে গিয়েছে।

তাঁর কথায়, ” সেচের জলাভাবে গ্রামে চাষবাস হত না। পানীয় জলের অভাব ছিল। এবার আর সেই সমস্যা থাকবে না। কারণ বর্ষার জল পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নদীতে গিয়ে পড়ে। পাহাড়ের কোল থেকে গ্রামের মাঝে খাল কেটে নিয়ে আসায় বর্ষার জল খালে এসে পড়বে। তাতে সেচের জল মিলবে, গ্রামবাসী ও গবাদিপশুর জলের সমস্যা থাকবে না। ”

গ্রামে জলের সমস্যার জেরে অনেকেই ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। এদিকে জঙ্গল ঘেরা গ্রামের আশপাশে মাওবাদীদের ডেরা। লঙ্গির কথায়, ” গরু মোষ নিয়ে চড়াতে যেতাম জঙ্গলে। হঠাৎ একদিন পাহাড়ের ঢাল বেয়ে বৃষ্টির জল পড়তে দেখে খাল কাটার ভাবনা মাথায় এল। পরদিন থেকে গরু নিয়ে যাওয়ার সময় কোদাল নিতাম। রোজ মাটি কেটেছি। কাটতে কাটতে গ্রামের মধ্যে খাল নিয়ে এসেছি। একাই করেছি। কাউকে বলিনি সাহায্য করতে। সকলের উপকার হবে।”

Previous article‘বন্ধু’ নেপালের জমিও এবার গ্রাস করছে চিন!
Next articleবিধি মেনে প্রায় ৬ মাস পরে খুলল তাজমহল, আগ্রা ফোর্ট