গত সাত দিন ধরে বারবার টিভির পর্দায় ভেসে উঠছে হাথরাস। বাল্মীকি পরিবারের কান্নাভেজা মুখগুলো দেখেছে সারা দেশের মানুষ। আর এই পরিবারের সঙ্গে ওতোপ্রতো ভাবে জড়িয়ে আছে বাংলা। হাথরাসের নির্যাতিতা আদতে বাংলার মেয়ে। এমনটাই মনে করে বার্নপুর। ওই পরিবারের সদস্যরা এক সময় বার্নপুরের ইস্পাত কারখানায় কাজ করত। বাবা, ঠাকুরদা কর্মসূত্রে থাকতেন আসানসোলে। বাল্মীকি পরিবারকে চিনতে দেরি হয়নি প্রাক্তন সহকর্মীদের। প্রাক্তন সহকর্মীর মেয়ের এহেন পরিণতিতে ক্ষুব্ধ বার্নপুরবাসী।
হাথরাসের নির্যাতিতা যুবতীর ঠাকুরদা বার্নপুর ইস্পাত কারখানার সেনেটারি বিভাগের কর্মী ছিলেন। বাবার কর্মসূত্রে বার্নপুরে থাকতেন তরুণীর বাবাও। তাঁর ছাত্র ও যৌবন কেটেছে শিল্পশহরে। বিয়েও হয়েছিল বার্নপুরে থাকাকালীন। নির্যাতিতার ঠাকুরদার সঙ্গে বার্নপুর ইস্পাত কারখানায় কাজ করতেন নিমাই বাউরি। তিনি জানান ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত বাল্মীকি পরিবার বার্নপুরেই থাকত। প্রথমে নিউটাউনের সুইপার কোয়ার্টারে থাকতেন। তারপর বার্নপুরের রাঙাপাড়ায় থাকতে শুরু করেন। তরুণীর বাবা বার্নপুর বয়েজ স্কুলের ছাত্র ছিলেন। নিমাই বাউরি বলেন, ‘‘আমরা মর্মাহত। একটা মেয়ের সঙ্গে এই নৃশংস আচরণ মেনে নিতে পারছি না। হাথরাস গ্রামে আমার আরেক সহকর্মী করণলাল বাল্মীকির মাধ্যমে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি ওই পরিবারের।”
এখনও বার্নপুরে থাকেন হাথরাসের বাল্মীকি পরিবারের সদস্যরা। কেউ নির্যাতিতা তরুণীর কাকা, কেউ বা তরুণীর বাবার মামতো ভাই। বার্নপুরের ইসকো কারখানার কর্মী জগদীশ বাল্মীকি সম্পর্কে ওই তরুণীর কাকা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি। লেখাপড়াও করেছি একসঙ্গে। গত বছর ওর বাবা কারখানার এরিয়ার বকেয়া টাকা নিতে এসেছিল বার্নপুরে। ওই টাকাতেই বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছিল। আমাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যা হলো আর হচ্ছে তা মেনে নিতে পারছি না। পশ্চিমবঙ্গে কখনও এরকম ঘটনার সম্মুখীন হইনি।’’
আরও পড়ুন:উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মত মাফিয়ারাজ এরাজ্যে, মুখ ফসকে এ কী বললেন দিলীপ?