মহামারির আবহে হুগলির ঘোষাল বাড়ির পুজোতেও কাটছাঁট

হুগলি জেলার অন্যতম প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম কোন্নগরের ঘোষাল বাড়ির পুজো। এই বাড়ির পুজো ৫৬৬ বছরে পড়ল। করোনার আবহে এ বছরের পুজো কিছুটা হলেও সংক্ষিপ্তভাবে করা হচ্ছে।
কোন্নগর ঘোষাল পরিবারের অন্যতম সদস্য প্রবীর ঘোষাল জানালেন, এই বাড়ির পুজো দীর্ঘ ৫৬৬ বছর ধরে চলে আসছে। আশপাশের এলাকার বহু মানুষ এই ঘোষাল বাড়ির পুজোয় অংশ নেন ।প্রতিবছর সপ্তমী থেকে দশমী অবধি এই পুজো প্রাঙ্গণে পরিবার সহ পাড়া-প্রতিবেশী সকলে একসঙ্গে পংক্তি ভোজন করে। কিন্তু এ বছর করোনার মারণ ব্যাধির কারণে বাড়তি সতর্ক আমরাও। তাই যা কিছু হবে তা সংক্ষিপ্ত আকারে।
এই বাড়ির পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান থেকে শুরু করে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রথিতযশা শিল্পীরা কোনও না কোনও সময়ে এখানে এসে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। কিন্তু এবারের যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি হবে, সেটা খুবই ছোট করে করা হচ্ছে, এবং পরিবারের সদস্যরাই তাতে অংশ নেবেন।
এখানকার পুজোয় বৈশিষ্ট্য হল, মাকে যে মিষ্টি নিবেদন করা হয় তা কিন্তু বাইরে থেকে আসে না, রীতি অনুযায়ী এবাড়ির মেয়েরা নাড়ু তৈরি করে সেই নাড়ু মাকে মিষ্টি হিসেবে দেন ।এছাড়াও এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, দশমীর দিন বাড়ির মা, কাকিমা ,জেঠিমা মিলে মাকে বরণ করেন। তবে তার আগে তারা পান্তা ভাত এবং ইলিশ মাছ খাওয়ার রীতি পালন করেন। বিসর্জনের পর আদা এবং ছোলা খেয়ে তারপর মিষ্টিমুখ করা হয়। কিন্তু এ বছরে আমাদের মন খুবই খারাপ কারণ যেহেতু একটা মহামারীর প্রকোপ শুরু হয়েছে যার জন্য বহু মানুষ আত্মীয়-স্বজন তারা এবারে আসতে পারবেন না ।বিশেষ করে বরণের সময় তাদের খুব মিস করব ।কারণ কোন্নগর ঘোষাল বাড়ির সিঁদুর খেলা এই পুজোর একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য। যা শুধুমাত্র বাড়ির পরিবারের সদস্যরা নয় পাড়া-প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে মা, কাকিমারা আসেন। কিন্তু এবারে যেহেতু একটা মহামারি চলছে তাতে কতটা করা যাবে সেইটাই প্রশ্ন , কারণ সবকিছু করতে হবে বিধি মেনে এবং সোশ্যাল ডিসটেন্স বজায় রেখে।

Previous articleসার্ভার বিভ্রাটের জের, রবীন্দ্রভারতীতে স্থগিত দূরশিক্ষার পরীক্ষা
Next articleবীরভূমকে কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা: ফের বেলাগাম রাজু