Monday, August 25, 2025

রাজ্যপালের দিল্লির বৈঠক এক্তিয়ার বহির্ভূত, মন্তব্য প্রদীপ-সুজনের

Date:

Share post:

রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক এবং তারপর সাংবাদিক বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী এবং কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। দুই রাজনৈতিক নেতার মতে, রাজ্যপালের দিল্লিতে এই দুই বৈঠক এক্তিয়ার বহির্ভূত।

সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘সাংবিধানিক একটি পদ রাজ্যপাল। সাংবাদিক বৈঠক ডাকা তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। রাজ্যপালের কোনও বক্তব্য থাকলে রাষ্ট্রপতিকে রিপোর্ট পাঠাতে পারেন। রাজ্যপাল পদটাকে রাজনৈতিক রং দেওয়া হচ্ছে। দিল্লি থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে পশ্চিমবঙ্গের বিরুদ্ধে বিষোদগার করাটা বিজেপির কাজ হতে পারে। এটা রাজ্যপালের কাজ নয়।’’ তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, বিজেপির এক্তিয়ারে যে রাজ্যগুলি আছে সেখানে ভালো কাজ হচ্ছে তো? ত্রিপুরায়, উত্তরপ্রদেশে, গুজরাত এ কী হচ্ছে? কাফিল খান কত দিন জেলে কেন? জেএনইউ ছাত্র, আলিগড়ের ছাত্র, অধ্যাপক বুদ্ধিজীবীরা জেলে যাচ্ছেন কেন? পশ্চিমবঙ্গের যে রকম পরিস্থিতি হোক না কেন রাজ্যপাল যা করেছেন এটা তাঁর কাজ নয় বলে মনে করেন সুজন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়,  ‘‘রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গের বাইরে গিয়ে রাজ্যের বদনাম করছেন।’’

একই সুর শোনা গেল কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের গলাতেও। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ যে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল দিল্লিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। কিন্তু রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে রিপোর্ট দেওয়ার আগে সংবিধান মেনে উচিৎ। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব ও মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা ভালো না খারাপ সে সম্পর্কে মতামত দেওয়ার অধিকার রাজ্যপালের কাছে কতটা আছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যপাল যে মতামত দেবেন তা যেন কখনই পক্ষপাতদুষ্ট না হয়। আজকের যে ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে দ্বিধা থেকেই যায়।  সাংবিধানিক পেরিফেরি অতিক্রম করে যে মন্তব্য রাজ্যপাল করেছেন তা করা উচিৎ হয়নি। রাজ্যপালের পদের মর্যাদা রক্ষা করাও কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।’’

প্রসঙ্গত, দিল্লিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এরপরই মিনিট ২০ বৈঠক সেরে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল। চেনা ভঙ্গিতে ফের রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। বৈঠকে বলেন, ‘‘দেশের সংবাদমাধ্যমের জানা উচিৎ পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি কেমন। এখানে বারবার আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে আছে। তাঁর জিজ্ঞাসা,  রাজনৈতিক আদেশ পালন করাই কি পুলিশের কাজ? বারবার প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু প্রশাসন উত্তর দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করেনি। পুলিশের মাধ্যমে শাসন চলছে বলেও তাঁর অভিযোগ।’’

আরও পড়ুন:রাজনৈতিক নেতার মতোই মন্তব্য রাজ্যপালের, কটাক্ষ তৃণমূল মহাসচিবের

 

spot_img

Related articles

আদিবাসী উন্নয়ন আরও সুদূর প্রসারি করার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, সৌজন্য উড়িয়ে বৈঠকে অনুপস্থিত বিজেপি

আদিবাসী উন্নয়ন নয়, রাজনীতিই যে তাদের লক্ষ্য তা আরও একবার প্রমাণ করল বিজেপি (BJP)। আমন্ত্রণ পেয়েও সৌজন্যের জবাব...

DHFC-র হারের পরই ক্লাব থেকে কর্তাদের ছোট করার চেষ্টা, জবাব দিলেন মানস

ডুরান্ড কাপের(Durand Cup) ফাইনালে পৌঁছে সকলকে চমকে দিয়েছিল ডায়মন্ডহারবার এফসি(DHFC)। বাংলার ফুটবলকে যে দল নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তাদের...

আধারের অভাবে রেশন বঞ্চনা নয়, কড়া নির্দেশ খাদ্য দফতরের 

আধার কার্ড না–থাকা বা বায়োমেট্রিক যাচাই না–হওয়ার কারণে আর কোনও বৈধ রেশন গ্রাহককে খাদ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত...

হাওড়ায় বৃদ্ধ খুনের নেপথ্যে সমকামী সম্পর্ক-ব্ল্যাকমেইল! তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য

হাওড়ায় বৃদ্ধ খুনের নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার সালকিয়ার অরবিন্দ রোডের বাসিন্দা অসীম দে (Asim de) খুন...