বিজেপিকে দুষে বিমল গুরুংকে স্বাগত জানাতে সভা-সমাবেশ শুরু দার্জিলিঙে

কিশোর সাহা: এবার বিজেপিকে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিমল গুরুংকে স্বাগত জানাতে প্রকাশ্যে আসরে নেমে পড়লেন তাঁর অনুগামীরা। বৃহস্পতিবার, কার্শিয়াং মহকুমায় একটি হোটেলের হলে সভা করেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার গুরুং শিবিরের লোকজনেরা। সেখানে গুরুংপন্থী বিমল দোর্জি সহ কযেকজন নেতা জানিয়ে দেন, ছোটখাটো কিছু জায়গায় গুরুং বিরোধী মিছিল হলেও পাহাড়ের সিংহভাগ মানুষ যে গুরুংয়ের সঙ্গে রয়েছে তা বোঝাতে বড় মাপের স্বাগত সমাবেশ হওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

মোর্চার অন্দরের খবর, কার্শিয়াঙের হোটেলের ওই সভায় হাজির সকলকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন যে যাঁর এলাকায় গিয়ে বিমল গুরুং কেন, কোন পরিস্থিতিতে রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে হাত মেলাতে বাধ্য হয়েছেন সেটা বোঝান।

সভায় বক্তারা জানান, বিজেপিকে গুরুংপন্থীরা বারবার সমর্থন করলেও আখেরে গোর্খাল্যান্ড কিংবা জিটিএ-এর আরও স্বশাসনের জন্য কেন্দ্র কিছুই পদক্ষেপ করেনি। বিজেপির সাংসদ রাজু বিস্তাও পাহাড়ের আবেগের সমর্থনে দু-চারটি বক্তৃতা করলেও স্থায়ী সমাধানের কোনও চেষ্টা করেননি বলেও ওই সভায় অভিযোগ ওঠে।

এরপরেই সভায় গুরুংপন্থী নেতারা জানিয়ে দেন, তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতাসীন হওয়ার আগে পাহাড়ে স্বশাসনের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পালন করতে গোর্খাল্যান্ড শব্দটি রেখে টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা কি না অতীতে বামেরা করেনি। সেই সঙ্গে গুরুংপন্থীদের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাময়িকভাবে কিছু দূরত্ব তৈরি হলেও বাস্তবে পাহাড়ের সামগ্রিক উন্নতির জন্য গুরুং যে ত্যাগ স্বীকার করছেন সেটাও পাহাড়ের গ্রামে-শহরে গিয়ে বোঝাতে হবে।

কট্টরপন্থী মোর্চার অন্দরের খবর, দেওয়ালির আগেই গুরুং ফিরবেন ধরে নিয়েই তাঁর অনুগামীরা এগোচ্ছেন। তার আগে আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার ব্যাপারেও জোর দিয়েছেন গুরুংয়ের আইনজীবীরা। ইতিমধ্যেই পাহাড়ের এক আইনজীবী কলকাতায় এবং আরেকজন দিল্লিতে পৌঁছেছেন। কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের যেমন আগামী সপ্তাহে গুরুংয়ের জামিনের আবেদনের মামলা উঠতে পারে, তেমনই সুপ্রিম কোর্টেও বিশেষ আবেদন দাখিল করা হতে পারে বলে গুরুংপন্থীদের একটি সূত্র দাবি করেছে।

বিজেপি দার্জিলিং জেলার নেতারা বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি। বিজেপির এক নেতা জানান, গুরুংপন্থীদের সভা, সমাবেশে কেমন লোকজন হচ্ছে সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। যে নেতারা গুরুংকে স্বাগত জানাতে আসরে নেমেছেন, তাঁদের কাছে নানাভাবে বার্তা পাঠিয়ে কাছে টানার চেষ্টাও করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন: আলাদিনের “আশ্চর্য প্রদীপ” বিক্রি আড়াই কোটি টাকায়! ক্রেতা বিলেত ফেরৎ ডাক্তার

গুরুং ঘনিষ্ঠ মোর্চা নেতানেত্রীদের কয়েকজন দাবি করেন, রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে জোট বেঁধে আগামী বিধানসভা ভোটে গুরুং যদি পাহাড়ের তিনটি আসন এবং সমতলের ১৩টি আসনে জয় নিশ্চিত করে দিতে পারেন তা হলে পাহাড় আরও বেশি স্বশাসনের দিকে এগোবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের উন্নতির জন্যই জিটিএ তৈরি করিয়েছিলেন। তা আরও শক্তিশালী করতেও তিনি বদ্ধপরিকর বলে গুরুংপন্থীরা লাগাতার প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Previous articleপরিচালককে খুনের হুমকি,মুরলীধরনের বায়োপিক নিয়ে অনিশ্চয়তা
Next articleপেঁচা কেন লক্ষ্মীর বাহন? কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় এই তথ্য আপনাকে জানতেই হবে