দেশের শিক্ষাব্যবস্থা, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের(Rabindranath) শিক্ষানীতি এবং আত্মনির্ভর ভারত মূলত এই তিন ইস্যুকে সঙ্গী করেই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের(Vishva Bharati University) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। শুক্রবার ভার্চুয়ালি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই আগামী ২৫ বছরের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য কি হবে তার দিশা পত্র বানানোর পরামর্শ দিলেন পড়ুয়াদের।
এদিন সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাল হত সমাবর্তন উৎসবে নিজে আসতে পারলে। যদিও তা সম্ভব না হওয়ায় দূর থেকেই বিশ্বভারতীর পবিত্র মাটিকে আমার প্রণাম। পড়ুয়াদের প্রতি রইল আমার শুভকামনা।’ এরপর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘ভারতের ঐক্যকে মজবুত করতে হবে আমাদের। মনে রাখতে হবে রবীন্দ্রনাথের অখণ্ড দেশ নিয়ে বার্তা। গুরুদেব বিশ্বভারতীকে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দেখেননি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দিয়েছিলেন বিশ্বভারতী।’ এরপর বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু স্বার্থ দেখলে, চারপাশে আপনি সমস্যাই দেখবেন। দেশকে অগ্রাধিকার দিলে, সমস্যার সমাধান আপনিই খুঁজবেন। সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা যুবক সম্প্রদায়ের। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য উপুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দেব আমরা। আসুন, সমাজের উন্নতির জন্য মিলেমিশে কাজ করি। জ্ঞান-বিচার-উৎকর্ষ এক জায়গায় থেমে থাকে না। জ্ঞান ও ক্ষমতা আসে দায়িত্ববোধ থেকে। ক্ষমতায় থাকলে সংযমী ও ধৈর্যশীল হওয়া জরুরি। আপনার চিন্তাধারা সমাজকে গৌরবান্বিত করে। তেমনি আপনার চিন্তাধারা সমাজকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করতে পারে। ফলে আপনার মানসিকতা সদর্থক রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন:‘এরাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা বন্ধ হোক’ : মৃত মইদুলের বাড়িতে গিয়ে বললেন বাদশা
পাশাপাশি বিশ্বভারতীর দিশা নির্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার ৭৫ বছরে বিশ্বভারতীর কর্তব্য দেশকে জাগরিত করা। আগামী ২৫ বছর বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা দিশা পত্র (ভিশন ডকুমেন্ট) বানান। স্বাধীনতার শতবর্ষে কী হবে বিশ্বভারতীর ২৫ লক্ষ্য? আশপাশের গ্রামগুলোকে আত্মনির্ভর তৈরি করলে কেমন হয়? সবাইকে আত্মনির্ভর করুন, গ্রামে যা উত্পন্ন হয়, তাকে আন্তর্জাতিক করুন।’ পাশাপাশি দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কেন্দ্রের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের বর্তমান শিক্ষানীতি পড়ুয়াদের স্বাধীনতা দিচ্ছে। আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে নতুন শিক্ষানীতি জরুরি। নতুন গবেষণার জন্য আগামী ৫ বছর ৫০ হাজার কোটি বরাদ্দের প্রস্তাব। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে কারিগরি শিক্ষায় সামিল করা হবে ছাত্রীদেরও। ডিগ্রি কোর্স থেকে বিরতি নেওয়ারও স্বাধীনতা থাকছে।’ পাশাপাশি অতীতের ভারতের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০ বছর আগে ভারতে শিক্ষিতের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। তখন মন্দিরেও শিক্ষাদান হত। তখনকার দিনে রাজারা মহাবিদ্যালয় গড়তেন। তখনকার ভারতে উচ্চশিক্ষার সংস্থানও ছিল। ১৮৩০ সালে বাংলা-বিহারে এক লক্ষের উপর গ্রামীণ বিদ্যালয় ছিল।’