বাগমারিতে তৃণমূলের ধর্ণামঞ্চে দাবি: নন্দীগ্রামে পুনর্গণনা চাই

নন্দীগ্রামে পুনর্গণনার দাবিতে এবং সন্ত্রাস নিয়ে বিজেপির চক্রান্তের প্রতিবাদে দিনভর অবস্থান করল TMC। বেলেঘাটা ও মানিকতলা কেন্দ্রের সংযোগস্থলে কোভিড সতর্কতা মেনে এই কর্মসূচিতে ছিলেন কুণাল ঘোষ , জীবন সাহা, স্বপন সমাদ্দার,  পাপিয়া ঘোষ  প্রমুখ।

বেলেঘাটা কেন্দ্রে পরেশ পালকে এবং মানিকতলা কেন্দ্রে সাধন পান্ডেকে বিপুল ভোটে জয়ী করার জন্য শুভেচ্ছা জানান কুণাল ঘোষ। সারা বাংলায় বিজেপি বিপর্যস্ত হওয়ার পর নন্দীগ্রামে উল্টে দিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করছে বিজেপি । কুণাল বলেন, যেখানে যেখানে তৃণমূল জিতেছে সেখানে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই মানুষ ভোট দিয়েছেন। সেখানে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই জিতেছেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি মারাদোনার প্রসঙ্গ তুলে আনেন। তিনি বলেন মারাদোনাকে আটকাতে গিয়ে তো অন্যদিক দিয়ে দশ গোল ঢুকে গেল। বিজেপি বলেছিল পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ অবিভক্ত মেদিনীপুর নিয়ে ৩৫ এ ৩৫ পাবে। কোথায় গেল সে সব। পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুরে মমতা-ম্যাজিকে সব ধুয়ে মুছে সাফ । কেন্দ্রীয় বাহিনীর অপব্যবহার করে বিজেপি সব করলো। কিন্তু মোদি- অমিত শাহ কোথায় গেলেন? প্রশ্ন কুণালের। করোনার ভ্যাকসিন নিয়েও রাজনীতিকরণ! কেন্দ্রীয় সরকার কম দামে কিনছে, রাজ্য সরকার বেশি দামে কিনছে, বেসরকারি ক্ষেত্রে আরও বেশি দাম ।
মুখ্যমন্ত্রী তৃতীয়বারের জন্য হ্যাটট্রিক করে শপথ নিয়েছেন এই বাংলায় । কুণাল বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে তিনি কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন । সেগুলো আমাদের মেনে চলতে হবে। কারণ একটাই, আমরা যাতে স্বাভাবিক সুস্থ জীবনে ফিরতে পারি।
যদি জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মীদের অন্য রাজ্য থেকে এখানে না আসতে হতো, বহিরাগতদের এখানে না ঢুকতে হতো, তাহলে আজকে বাংলার এই পরিস্থিতি হতো না। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। আমরা সংক্ষিপ্ত সময়ে নির্বাচন চেয়েছিলাম। কিন্তু শোনেনি কেন্দ্র। কারণ , মোদি – অমিত শাহ বারবার এই বাংলায় আসতে পারতেন না। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তৃণমূলের আন্দোলন। বাংলার মানুষ উজার করে তা প্রমাণ করে দিয়েছেন। আমরা চাইনা বাংলা খারাপ থাকুক ।
তিনি বলেন, দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন বাড়িতে বউ ছেলেমেয়েকে দেখার লোক থাকবে না। আর আজকে সেই দিলীপ ঘোষই রাজ্যপালের কাছে গিয়ে সাধু সাজছেন। কেন কীসের জন্য?প্রশ্ন তুললেন কুণাল ।
তিনি বলেন গণনার ৭২ ঘন্টা আগে বিজেপি কর্মীদের দেখে মনে হচ্ছিল সরকারটা তারাই তৈরি করে ফেলেছেন। কিন্তু বাংলার মাটি , বাংলার মানুষ সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে বিজেপির বাংলায় কোনও স্থান নেই। আজ হেরে গিয়ে বিজেপি গন্ডগোলের বদনাম রটাচ্ছে। যেসব গন্ডগোল চলছে সেটা আদি বিজেপি ও তৎকাল বিজেপির মধ্যে ।
কুণালের কটাক্ষ , বড় বড় বাতেলা দিলেই বাজিমাত করা যায় না। আদি ও তৎকাল বিজেপির মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে । নিজেরাই ধরে ধরে পেটাচ্ছে, আর বদনাম করছে তৃণমূলের ।আদি বিজেপি আর তৎকাল বিজেপির মধ্যে মারামারি চলছে। বিজেপি মিথ্যাচার করছে।
ওদের সভাপতি জেপি নাড্ডা যতবার বাংলায় এসেছেন, মঞ্চে উঠতে পারেননি লোক ছিল না বলে !এখন নাটক করছেন। মমতাদি পরিষ্কার বলেছেন, আমাদের কর্মীরা করবি না এমন কিছু করবে না যাতে অন্যের ক্ষতি হয়।
২০১১ সালে আমরা রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনেছিলাম । ২০১৬ সালে আমরা কোনও বদলাইনি। ২০২১- এ বিজেপি কর্মীরা শিক্ষা নিক যে বাংলা বাংলাতেই আছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নোংরামি করছে বিরোধী বিজেপি। তারপরও আমরা তৃনমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রী কর্মী সমর্থকরা নিজেদের সংযত রেখেছি। আমরা তো হাতে নাতে প্রমাণ পেয়েছি, ভোটের দিন থেকে ভোটের পরবর্তী সময়ে ঝামেলা পাকানোর জন্য ২০০০ টাকা করে দিয়েছে বিজেপি। তৃণমূল কর্মীদের পেটাতে বলেছে টাকা দিয়ে । গন্ডগোল করিয়ে ঝামেলা পাকাতে বলেছে। সেই বিজেপি নেতাদের এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ।
তিনি আরও বলেন, মানুষের জীবনকে বিপদমুক্ত স্বাভাবিক রাখতে হবে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সহযোগিতা করব আমরা। রখন কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে তখন অনেক অন্যান্য কর্মসূচি হবে। এখন সবার প্রথম কাজ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে সরকার শপথ নিল তারা মানুষের পাশে থাকবে।
মানুষের পাশে থাকবে তৃণমূল , এর জন্য তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের আহ্বান জানালেন কুণাল ।

Advt

Previous articleজনদরবারে বাতিল মিঠুন টুইট করেই জবাব পেলেন
Next articleহেরে গিয়েও বাঁকুড়ার মানুষের পাশে সায়ন্তিকা