NHRC-এর রিপোর্টে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীরা ‘কুখ্যাত অপরাধী’, দাবি CBI তদন্তেরও

যে কাজ এখনও বিজেপি করে উঠতে পারেনি, গেরুয়া-শিবিরের স্বার্থ রক্ষা করে ঠিক সেই কাজই করে দেখালো ভারতবর্ষের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন৷ আর এর পরই এই কমিশনকে বিজেপির ‘শাখা সংগঠন’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে রাজনৈতিক মহল৷ তাঁদের কথায়, বাংলার মানুষ ইতিমধ্যেই এক বিজেপি কর্মীকে রাজ্যপালের দায়িত্ব সামলাতে দেখেছে, এবার সাংবিধানিক এক কমিশনকে দেখা গেলো বিজেপির ফ্রন্টাল- অর্গানাইজেশন’ হিসেবে৷

কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট ‘কুখ্যাত অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা ও মন্ত্রীকে।

রাজনৈতিক মহল বলছে, এই স্ক্রিপ্ট সাজানো হয়েছিলো একুশের ভোটের ফলপ্রকাশের পরই৷ ভোটে লজ্জাজনক পরাজয়ের পর মুখরক্ষায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসার অভিযোগ তোলে বিজেপি। এর পর ওইসব ঘটনাকে ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। আদালত সঠিকভাবেই অশান্তির রিপোর্ট খতিয়ে দেখতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দায়িত্ব দেয়। আর তারপরই ‘খেলা’ শুরু হয়৷ গঠিত হয় কমিশনের বিশেষ একটি দল৷ সেই দল রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ায় বিজেপি’র স্থানীয় নেতা- কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে৷ গত মঙ্গলবার কমিশনের তরফে গঠিত বিশেষ দলটির তথাকথিত তদন্তের রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়৷ বৃহস্পতিবার সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই দেখা গিয়েছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এ রাজ্যের ‘কুখ্যাত অপরাধী’র তালিকায় রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর নাম। তালিকায় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তৃণমূল নেতা পার্থ ভৌমিক, বিধায়ক শওকত মোল্লা, বিধায়ক খোকন দাস, প্রাক্তন বিধায়ক উদয়ন গুহ’র নাম রয়েছে। অপরাধী- তালিকায় রয়েছে কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ারের নামও ৷

এছাড়াও নাম রয়েছে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের৷ সুফিয়ানের নাম ঢোকানোর পিছনে বিজেপির এক বিশেষ নেতার হাত রয়েছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে৷ তালিকায় আরও ১৫-২০ জন তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এলাকা ধরে ধরে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের নির্দেশে অপরাধীদের নামের তালিকা দিয়েছে রিপোর্টে ৷ একাধিক মহিলার নাম-সহ মোট ১০০ জনেরও বেশি নাম রয়েছে ‘কুখ্যাত অপরাধী’ বা ‘গুণ্ডা’র তালিকায়। নাম আছে রাজ্যের মন্ত্রী, একাধিক প্রাক্তন ও বর্তমান বিধায়ক, কাউন্সিলর-সহ ১০ জনের বেশি হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার নাম৷

এখানেই শেষ নয়৷ NHRC-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘এত বড় ষড়যন্ত্রের তদন্তে CBI প্রয়োজন’ ৷ কমিটির পর্যবেক্ষণ, আইনের শাসন নয়, বাংলায় শাসকের আইন চলছে রাজ্যে৷ এই পরিস্থিতিতে এসব ঘটনার CBI তদন্ত প্রয়োজন । তাদের মতে, বিশেষ আদালত তৈরি করে বিচার করার প্রয়োজন রয়েছে৷ আর এখানেই বিজেপি, রাজ্যের রাজ্যপালের গলার সুর স্পষ্টভাবে শোনা গিয়েছে কমিশনের গলায়৷ কমিশনের এই রিপোর্টে নিষ্ক্রিয় পুলিশ আধিকারিক ও থানার তালিকাও দেওয়া হয়েছে ৷ এই সব থানা এলাকায় একাধিক হিংসার ঘটনা ঘটলেও না’কি FIR নেওয়া হয়নি ৷

তৃণমূল কংগ্রেস জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এই রিপোর্টকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করেছে৷

আরও পড়ুন- শনিবার রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্স, স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে বিশেষ ছাড় পরীক্ষার্থীদের

Previous articleশনিবার রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্স, স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে বিশেষ ছাড় পরীক্ষার্থীদের
Next articleদলীয় কর্মসূচিতে “গরহাজির”-এ রেকর্ড গড়া বিজেপির তিন বিধায়ক নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে