বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের হাতেই থাকছে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), নিবন্ধন কার্যক্রম সেবা তুলে দেওয়ার কথা উঠলেও সেই প্রস্তাবে সাড়া দিল না বাংলাদেশ আইন মন্ত্রণালয়। ফলে আপাতত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাতেই থাকছে এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রম। এনআইডি পরিষেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের হাতে দিতে ‘রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬’-এর সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করেছিল মন্ত্রিপরিষদ । সেই প্রস্তাবে সম্মতি না দিয়ে এই সংক্রান্ত নথি ফেরত পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

তাদের বক্তব্য, এটি করতে হলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০১০-এ সংশোধনী আনতে হবে। এ জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন ও প্রস্তাবিত সংশোধনী আইনটি বিল আকারে জাতীয় সংসদে পাসও করাতে হবে। ফলে এসব প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইসির হাতেই থাকছে এনআইডি সেবা। তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন –মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে “গভীরভাবে উদ্বিগ্ন”, আফগানিস্তানকে আর্থিক সহায়তা বন্ধ বিশ্ব ব্যাঙ্কের

বাংলাদেশ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এনআইডি সেবা-সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সুরক্ষাসেবা বিভাগের আওতায় দিতে হলে অবশ্যই এসংক্রান্ত জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০-এর সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধন করতে হবে। আইনে উল্লিখিত ‘নির্বাচন কমিশন’-এর স্থলে ‘সরকার’ শব্দ অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন হবে। আর এটি করতে হলে এসংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগবে, সঙ্গে অনুসরণ করতে হবে বিভিন্ন প্রক্রিয়া। এর পরই রুলস অব বিজনেস সংশোধন করতে হবে। কিন্তু তা না করে শুধু রুলস অব বিজনেসের সংশোধন করার প্রস্তাব পাঠানোর কারণেই নথিটি ফেরত এসেছে। সরকার চাইলে এখন সেসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এনআইডি সেবা সুরক্ষাসেবা বিভাগের আওতায় দিতে পারে। এ জন্য কিছুদিন সময় প্রয়োজন। সেই সময় পর্যন্ত ইসির হাতেই থাকছে এনআইডি সেবা কার্যক্রম।

জানা গিয়েছে, ২০০৭ সাল থেকে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের অংশ হিসেবে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে আসছে ইসি। তারাই এখন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের সব কার্যক্রম পরিচালনা করে। ইসিকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের ১৭ মে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এক চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন দেশের উদাহরণের আলোকে সুরক্ষাসেবা বিভাগ ওই দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বিবেচিত। এ জন্য এসংক্রান্ত দায়িত্ব সুরক্ষাসেবা বিভাগে ন্যস্ত করার লক্ষ্যে ‘অ্যালোকেশন অব বিসনেস অ্যামং ডিফরেন্ট মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশনস’-এ সুরক্ষা বিভাগের দায়িত্বসমূহের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এ জন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০-এ ‘নির্বাচন কমিশন’-এর পরিবর্তে ‘সরকার’ শব্দ অন্তর্ভুক্তকরণসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল ইসি থেকে সুরক্ষাসেবা বিভাগে হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগকে নির্দেশ দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রসঙ্গত, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার ক্ষমতা ও এক্তিয়ার ইসিকে দেওয়া হয়েছে। ওই আইনের বলে নির্বাচন কমিশন নাগরিকদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বা লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে আসছে।

advt 19

 

Previous articleUNESCO প্রকাশিত ঐতিহ্যশালী আন্তর্জাতিক উৎসবের তালিকায় বাংলার দুর্গাপুজো? আবেদন করছে নবান্ন
Next articleস্বস্তির খবর! সম্ভবত অতিমারির শেষ ধাপে ভারত, বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা