‘‘রাজ্যপাল সংবিধান মেনেই কাজ করছেন। সেটাই তাঁর কাজ করার কথা। আমাদের সঙ্গে রাজ্যপালের বিরোধের কোনও জায়গা নেই। বিধানসভা পরিচালনার ক্ষেত্রে তেমন কিছুই দেখিনি।’’ গত কয়েকদিন রাজ্য-রাজভবন ঠাণ্ডা লড়াইয়ের মধ্যেই এই মন্তব্য করলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee)। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যপাল তাঁর মতো আছেন। আমি তাঁর মধ্যে কোনও ব্যতিক্রম বা পরিবর্তন দেখছি না।’’
প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankar) সঙ্গে নবান্নের সংরঘাত তুঙ্গে পৌঁছেছিল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে স্পিকার সম্মেলনে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছিলেন অধ্যক্ষ। ধনকড় বিধানসভা পরিচালনার কাজে হস্তক্ষেপ করছেন বলে অভিযোগ করেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ধনকড়কে সরানোর জন্য দিল্লিতে দরবারও করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসেবে আসেন লা গণেশন। তিনি কিছুদিন থাকার পর আসেন সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। গত বছর নভেম্বর মাসে বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্বে আসার পর থেকে তাঁর সঙ্গে বেশ মধুর সম্পর্ক ছিল রাজ্যের। কিন্তু সেটা চক্ষুশূল হয় বিরোধী বিজেপির (BJP)। বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণ ঘিরে চূড়ান্ত অভ্যবতা করেন বিজেপি বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা।
বিধানসভায় আটকে থাকা বিলগুলি নিয়ে কিছুটা নরম মনোভাব নেন আনন্দ বোস। কিন্তু সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকে গাড়িতে হামলার ঘটনার পরে রাজ্যপালের মন্তব্যের পর থেকে রাজ্য-রাজ্যপাল দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে রাজ্যপালের কোনও বিরোধ নেই। বিধানসভার কাজ বাদ দিয়ে তো আলোচনার জায়গা নেই। তাই কোনও বিরোধও নেই।’’ রাজ্যপালের কাছে আটকে থাকা বিল নিয়ে স্পিকার বলেন, ‘‘অনেক বিল পাঠিয়েছি। রাজ্যপালের উচিত বিলগুলি ছেড়ে দেওয়া। দেশের সব জায়গায় বিধানসভায় বিতর্ক আছে। আমার মনে হয়, রাজ্যপালের কাছে যে বিল যাচ্ছে, সেটার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত।’’