হিংসাদীর্ণ উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর(Manipur)। এই রাজ্যের অশান্তির দেশ এবার আছড়ে পড়ল পড়শি মেঘালয়ে(Meghalaya)। শিলং এর(Shillong) কাছে নোংরাম হিল অঞ্চলে কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের জেরে আহত হলেন একাধিক। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৬ জনকে গ্রেফতার করল মেঘালয় পুলিশ। শান্তি বজায় রাখতে সকলের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
এই মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গেই জনজাতিভুক্ত সম্প্রদায়ের সংঘর্ষের জেরেই উত্তাল হয়ে উঠেছে মণিপুর। মণিপুরি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’(এটিএসইউএম)-এর তরফে বুধবার আন্দোলনকারী মেইতেই জনগোষ্ঠীর দাবির বিরোধিতা করে একটি মিছিল বার করা হয়েছিল। সেখান থেকেই মণিপুরের ৮টি জেলায় হিংসা ছড়ায়। সম্প্রতি মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেখান থেকেই সংঘাতের সূচনা।
মূলত সমতল এলাকার বাসিন্দা মেইতেইরা মণিপুরের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী। অন্য দিকে, কুকি, অঙ্গামি, লুসাই, নাগা, থাড়োয়াসের মতো প্রায় ৩০টি জনজাতি গোষ্ঠীর বাস পাহাড়ি এলাকায়। তাদের আশঙ্কা, জনজাতির মর্যাদা পেলেই পাহাড়ি এলাকার জমিতে হাত বাড়াবে মেইতেইরা। এখন জনজাতির মর্যাদা না পাওয়ায় তারা ওই জমি কিনতে পারে না। যদিও মেইতেইদের দাবি, ১৯৪৯ সালে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মণিপুর সংযুক্ত হওয়ার আগে তাঁরা জনজাতি হিসাবে গণ্য হতেন। কিন্তু সংযুক্তিকরণের পর সেই পরিচয় হারান তাঁরা। ফলে জনজাতি জমির অধিকার, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাংবিধানিক রক্ষাকবচও হারিয়েছেন। সব মিলিয়ে সংঘর্ষের জেরে বর্তমানে ভয়াবহ আকার নিয়েছে মণিপুর। সরকারিভাবে এখনো হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করা না হলেও জানা যাচ্ছে গোষ্ঠী সংঘর্ষে এখনো পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।