‘যু.দ্ধ এখনও বাকি’! মানিক মামলায় মন্তব্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের, হাইকোর্টে জমা পড়ল ৯৯ পাতার FIR

সব দেখে শুনে এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, এই দুর্নীতি আর নিয়োগ দুর্নীতি এক নয়। একে ‘ডিজাইনড কোরাপশন’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটা লড়াই চলছে, যুদ্ধ এখনও বাকি!

মঙ্গলের পর ফের বুধবার। শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রেসিডেন্সি জেল (Presidency Jail) থেকে বেরোন সিবিআই আধিকারিকরা (CBI Officials)। মঙ্গলবার রাতেই মানিকের বিরুদ্ধে প্রায় ৯৯ পাতার এফআইআর (FIR) দাখিল করেছে সিবিআই। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ (প্রতারণা), ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ৪৬৭ (নথি জাল করা, নকল নথি বানানো), ৪৬৮ (জালিয়াতি) নম্বর ধারায় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৭, ৭এ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এফআইআর-এর সেই কপি বুধবার আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে বলে খবর। মঙ্গলবার রাতেই প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে মানিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এরপর বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ ফের প্রেসিডেন্সি জেলে পৌঁছন সিবিআই আধিকারিকরা।

এদিন সিবিআইয়ের এসপি কল্যাণ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে মানিককে জেরা করেন সিবিআইয়ের চার আধিকারিক। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত এবং বুধবার সকালের সেই জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করেছে সিবিআই। তবে মানিক ভট্টাচার্য তদন্তে সহযোগিতা করছেন বলেই সিবিআই সূত্রে খবর। প্রাথমিকে পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে নতুন মামলা দায়ের করেছিলেন মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, বীরভূম, হুগলি জেলার কয়েকশো প্রার্থী। এই মামলাতেই মঙ্গলবার সিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এদিন হাইকোর্ট সাফ নির্দেশ দেয়, প্রয়োজনে এফআইআর দায়ের করে মানিককে হেফাজতে নিতে পারে সিবিআই। তার পরেই দু’দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর মানিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সব দেখে শুনে এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly) মন্তব্য করেন, এই দুর্নীতি আর নিয়োগ দুর্নীতি এক নয়। একে ‘ডিজাইনড কোরাপশন’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটা লড়াই চলছে, যুদ্ধ এখনও বাকি!

বুধবার হাইকোর্টে সওয়াল জবাব পর্বে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, নিজের জেলায় শূন্যপদ নেই বলে জানানো হয়েছিল শিক্ষকদের। ২০২১ সালের ৬ জুলাই সেই তালিকা বের করে পর্ষদ। ফলে বাধ্য হয়ে দূরের জেলায় চাকরি গ্রহণ করেন বহু শিক্ষক। ৪০০ থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে প্রাথমিক স্কুলে পোস্টিং পান যোগ্য শিক্ষকরা। অথচ কয়েক দিন পর ৩০ জুলাই ফের শূন্যপদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে দেখা যায় সবারই নিজের জেলায় শূন্যপদ আছে। মাত্র ২৩ দিনে কী করে তৈরি হল এই শূন্যপদ? এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। বুধবার হাইকোর্ট সিবিআইকে নির্দেশ দেয়, আগামী শুক্রবার যেন মানিককে জিজ্ঞাসাবাদের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেয় তারা। তদন্তে কী কী তথ্য পেল, সবটা জানাতে হবে আদালতে। পাশাপাশি মানিকের জেরার ভিডিওগ্রাফিও জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২ অগাস্টের মধ্যে সমস্ত রিপোর্ট জমা দেবে সিবিআই এবং ইডি। তবে জেল হেফাজতে থাকা মানিককে সিবিআই নিজের হেফাজতে নিয়ে জেরা করবে কি না, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়।

 

 

Previous articleসোমে সংসদে বিতর্কিত দিল্লি অর্ডিন্যান্স বিল, বিরোধিতায় কেজরিওয়ালের পাশে I.N.D.I.A.
Next articleমাত্র ৮ রানে ৭ উইকেট! বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন মালয়েশিয়ার বোলার