আজ ভারতের হাতের মুঠোয় চাঁদ! তবে ইতিহাস তৈরি হয় ২০০৮ সালেই

ইতিহাস তৈরির দিনেই মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাস কিন্তু অন্য কথা বলছে। আসল তথ্য জানতে একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যেতে হবে। সাল ২০০৮, তারিখ ১৪ নভেম্বর। সেই দিনই প্রথম ভারতের সফল চন্দ্র অভিযান (Moon Mission)হয়।

চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান-৩ এর (Chandrayaan3)সফল অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হল ইতিহাস। উচ্ছ্বাসে ভাসল গোটা দেশ। ৪০ দিন ধরে অনবরত উৎকণ্ঠা বাড়ছিল। দুদিন আগেই মুখ থুবড়ে পড়েছে রাশিয়ার লুনা ২৫। তাই চিন্তায় ছিলেন ইসরোর (ISRO)বিজ্ঞানীরাও। কিন্তু বুধবার ঠিক সন্ধ্যা ৬ টা ৪ মিনিটে হাসি আর গর্বের মেলবন্ধন উজ্জ্বল করল ভারতের তেরঙ্গাকে। এখনও পর্যন্ত পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিন চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে তাদের মহাকাশযান নামাতে পেরেছিল। চন্দ্রযান-৩ সফল হওয়ায় ভারত এই তালিকার চতুর্থ দেশ হল। তবে দক্ষিণ মেরুতে এই প্রথম বিশ্বের কোনও দেশ পা রাখল বলেই দাবি করা হচ্ছে। সত্যি কি এই প্রথম চাঁদে পৌঁছতে পারল ভারত (India)? ইতিহাস তৈরির দিনেই মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাস কিন্তু অন্য কথা বলছে। আসল তথ্য জানতে একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যেতে হবে। সাল ২০০৮, তারিখ ১৪ নভেম্বর। সেই দিনই প্রথম ভারতের সফল চন্দ্র অভিযান (Moon Mission)হয়।

২০০৮ সালে চাঁদে চন্দ্রযান বা চন্দ্রযান-১ (Chandrayaan-1)পাঠিয়েছিল ভারত। এই অভিযান সংক্রান্ত অনেক তথ্য এখনও অনেকের অজানা। ওই বছরের ১৪ নভেম্বরই চাঁদের বুকে পৌঁছে যায় ভারতীয় একটি মহাকাশযান। ২২ অক্টোবর ভারতীয় সময় অনুযায়ী সকাল ৬:২২ মিনিটে চেন্নাইয়ের ৮০ কিলোমিটার উত্তরে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের নেলোর জেলার শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান-১ উৎক্ষিপ্ত হয়। নভেম্বরের ১৪ তারিখে সন্ধ্যা ২০:০৬ মিনিটে মুন ইমপ্যাক্ট প্রোবটি (Moon Impact Probe) চাঁদের কক্ষপথে ভ্রাম্যমাণ চন্দ্রযান থেকে পৃথক হয়ে যায় এবং চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে। চন্দ্রযান ১ মহাকাশযানটি চাঁদের রাসায়নিক, খনিজতাত্ত্বিক এবং ফটো-জিওলজিক ম্যাপিংয়ের জন্য চন্দ্র পৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে। মহাকাশযানটি ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সুইডেন এবং বুলগেরিয়াতে নির্মিত ১১টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র বহন করেছিল। এই রিমোট সেন্সিং চান্দ্র উপগ্রহটির উৎক্ষেপণ মুহুর্তের ওজন ছিল ১৩৮০ কিলোগ্রাম এবং চান্দ্র কক্ষপথে প্রবেশকালে এর ওজন হয় ৬৭৫ কিলোগ্রাম। এই যানে প্রায় ইনফ্রারেড, সফট ও হার্ড এক্স-রশ্মি স্পন্দনের জন্য ব্যবহৃত উচ্চ রেজোলিউশনের রিমোট সেন্সিং যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়া হয়। ভারতের এই মহাকাশযানই চাঁদে জলের অস্তিত্ব প্রথম খুঁজে পেয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিল। ‘রাডার অল্টিমিটার’টি চন্দ্রপৃষ্ঠের সঙ্গে দূরত্ব মাপার কাজ করছিল। চাঁদের বায়ুমণ্ডল সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছিল ‘স্পেকট্রোমিটার’। প্রায় ১০০ কিলোমিটার উঁচু থেকে চন্দ্রযান ছেড়ে চাঁদের দিকে নামতে শুরু করে মহাকাশযানটি। কোনও রকম বাধা ছাড়া মহাকাশ থেকে চাঁদের বুকে নামতে যানটির সময় লেগেছিল ২৫ মিনিট। সমস্ত প্রধান মিশনের উদ্দেশ্য সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর,২০০৯ সালের মে মাসে কক্ষপথটি ২০০ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়। উপগ্রহটি চাঁদের চারপাশে ৩৪০০ টিরও বেশি কক্ষপথ তৈরি করেছে এবং ২৯ আগস্ট মহাকাশযানের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে মিশনটি শেষ বলে ঘোষণা করা হয়।

 

Previous articleআর ফিরবেন না পুরানো বাংলোয়, সংসদকে জানালেন রাহুল
Next articleফিরে আসুন, পাশে আছে রাজ্য: পরিযায়ী শ্রমিকদের বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, ঠিকদারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস