নিজেকে ‘গরীবের ছেলে’ দাবি! লোকসভা নির্বাচনের আগে ‘পিএম বিশ্বকর্মা’ প্রকল্পের উদ্বোধন মোদির

তৃণমূল সাংদ মহুয়া মৈত্রের কটাক্ষ , বাজপেয়ী একজন নেতা ছিলেন এবং মোদি একজন ছোট হৃদয়ের নিরাপত্তাহীন রাজনীতিবিদ।

চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশের মানুষের মন জয়ের চেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi)। রবিবার ৭৩ বছরে পা দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আর রবিবারই বিশ্বকর্মা পুজোকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন ‘পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা’ (PM Vishwakarma Yojana)। ওবিসি ক্যাটেগরির (OBC Category) কারিগররা ওই যোজনার সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাবেন। চলতি বছর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণেই ওই প্রকল্পের কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই প্রকল্পেরই আজ উদ্বোধন হল। তবে কেন্দ্রের দাবি, দেশের প্রথাগত শিল্পকর্মকে বাঁচিয়ে রাখাতেই এমন প্রকল্প। কেন্দ্র যতই সাফাই গাক না কেন এমন ঘোষণাকে ভালো চোখে দেখতে নারাজ বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের আগে এসব করে লাভের লাভ কিছুই হবে না। উল্টে দেশের সাধারণ মানুষকে আরও বড় বিপদের মুখে ঢেলে দিচ্ছে কেন্দ্রের মোদি সরকার।

রবিবার নয়াদিল্লির দ্বারকায় এক্সপো সেন্টার ‘যশোভূমি’ (YashoBhoomi) উদ্বোধন করেন মোদি। পাশাপাশি বিশ্বকর্মা জয়ন্তীতে তিনি সূচনা করলেন ‘পিএম বিশ্বকর্মা’ (PM Vishwakarma) প্রকল্পেরও। ১৩ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন শিল্পী, কারিগর তথা ছোট ব্যবসায়ীরা। তবে এদিন প্রকল্পের উদ্বোধন করে মোদি বলেন, গরিবের ছেলে মোদি আপনাদের সেবায় সদা তৎপর। তবে নিজেকে গরীবের ছেলে বলায় বিরোধীদের চরম কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। কংগ্রেসের তরফে বিবৃতি জারি করে এই প্রকল্পকে জুমলা বলে মন্তব্য করা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, “ভারতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষতি করেছে নোট বাতিল, জিএসটি এবং তারপর লকডাউন। ভুক্তভোগীদের তালিকায় বস্ত্রশিল্প, চামড়া, ধাতব সামগ্রী, কাঠের কাজ, এবং অন্যান্য। মোদি সরকারের কাজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁরা।” তাঁর বক্তব্য, “বারবার দেশের মানুষকে বোকা বানানো যায় না। প্রধানমন্ত্রীর অবসরের সময়. হয়েছে।” যেভাবে সমস্ত প্রকল্পকে নিজের নামে প্রচার করা হয় তা নিয়েও কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার সংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি বলেছেন, “২০০২ সালে প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের সাথে দিল্লি মেট্রোর উদ্বোধন করেছিলেন”। মহুয়া মৈত্রের আরও কটাক্ষ , বাজপেয়ী একজন নেতা ছিলেন এবং মোদি একজন ছোট হৃদয়ের নিরাপত্তাহীন রাজনীতিবিদ।

এদিকে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখেলের দাবি, দ্বারকায় কনভেনশন সেন্টার তৈরিতে খরচ হয়েছে ২৭,০০০ কোটি টাকা। যেখানে নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে ৮৬২ কোটি, সেন্ট্রাল ভিস্তার পুরো অংশের জন্য ২০,০০০ কোটি, জি২০ সম্মেলনে ৯৯০ কোটি টাকা। সাকেতের প্রশ্ন “যখন ভারত মণ্ডপম রয়েছে তখন এমন একটি বিরাট অঙ্কের সেন্টার তৈরির প্রয়োজন কি ছিল। কেন তার খরচ সেন্ট্রাল ভিস্তার থেকেও বেশি হল?”

 

মোদি এদিন আরও জানান, ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জামানত মুক্ত ঋণ দেওয়া হবে শিল্পী ও কারিগরদের। পাশাপাশি তৈরি করা পণ্যের জন্য গুণমান শংসাপত্র, ব্র্যান্ডিং এবং বিজ্ঞাপনের জন্য বিপনন সহায়তা করা হবে। মোট ১৮ ধরনের শিল্পী ও কারিগররা পিএম বিশ্বকর্মার সুবিধা পাবেন বলে জানানো হয়েছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, অদূর ভবিষ্যতে কারিগরি প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি এবং সেই সংক্রান্ত সরঞ্জাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। সেই কারণেই ‘প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা’ প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে। কারিগররা হাতে পাবেন পিএম বিশ্বকর্মা সার্টিফিকেট ও পিএম বিশ্বকর্মা আইডি কার্ড। ওই কার্ডের বিশেষ ডিজিটাল নম্বর ব্যবহার করে কারিগররা ওই প্রকল্পের বিভিন্ন সুবিধে পাবেন।

মোট তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে পিএম বিশ্বকর্মা প্রকল্পকে। এগুলি হল স্কিল অ্যাসেসমেন্ট, স্কিল বেসিক ট্রেনিং ও অ্যাডভান্স ট্রেনিং। এদিকে বেসিক ট্রেনিংয়ের সময়ে কারিগরদের রোজ ৫০০ টাকা অর্থাৎ মাসে ১৫ হাজার টাকা স্টাইপেন্ড দেওয়া হবে। পাশাপাশি ট্রাডিশনাল কারিগরদের সাহায্যের জন্য এই প্রকল্পের আওতায় দেওয়া হবে সহজ শর্তে ঋণ। প্রাথমিকভাবে কারিগরদের ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। আর সেই ঋণ শোধ করতে হবে ১৮ মাসে। পরবর্তী কালে দেওয়া হবে ২ লাখ টাকা ঋণ। সেই ঋণ শোধ করতে হবে ৩০ মাসে। এক্ষেত্র সুদ দিতে হবে ৫ শতাংশ।

 

 

 

Previous articleবলিউড অভিনেত্রী জারিন খানের বি.রুদ্ধে জারি গ্রেফ.তারি পরোয়ানা!
Next articleলঙ্কানদের উড়িয়ে এশিয়া কাপ চ‍্যাম্পিয়ন টিম ইন্ডিয়া