আজকের দিনে কী কী ঘটেছিল? চলুন দেখে নেওয়া যাক

১৮১৭

কলকাতায় এদিন হিন্দু কলেজে ক্লাস শুরু হল। রামমোহন রায় ও ডেভিড হেয়ার ও বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের প্রস্তাব তত্‍কালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির স্যার হাইড ইস্টের কাছে পাঠালে তিনি একটি কলেজ গড়তে সম্মতি দেন৷ শেষে গরানহাটায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়৷ ২০ জন ছাত্র নিয়ে৷ কলেজ পরিচালনা এবং ব্যয়ভারের দায়িত্ব নেন রাধাকান্ত দেব, রামকমল সেন, প্রসন্ন ঠাকুরের মতো কিছু ব্যক্তি৷ কলেজের প্রথম গভর্নর বর্ধমানের মহারাজ তেজচন্দ্র বাহাদুর এবং বাবু গোপীমোহন ঠাকুর৷ ১৮১৬-র ২১ মে কলেজের প্রতিষ্ঠাতারা সিদ্ধান্ত নেন, পরিকল্পিত কলেজের নাম হবে ‘হিন্দু কলেজ’। তাই ১৮১৬ সালের ২৭ অগাস্ট অনুমোদিত কলেজের নিয়মাবলির ১৪ নং অনুচ্ছেদে পরিষ্কার বলা হয়েছে— ‘21st day of May 1817, being the anniversary of the day on which it was agreed to establish the institution’. যে হিন্দু কলেজ স্থাপন করেছিলেন দেশীয় প্রতিষ্ঠাতৃবর্গ তার ছিল দু’টি বিভাগ— সিনিয়র আর জুনিয়র। ইতিহাসের অমোঘ নিয়মে ক্রমশ তার মধ্যে ঢুকে পড়ে সরকার। এক সময় রীতিমতো নির্দেশনামা জারি করে বলে, সিনিয়র বিভাগ হবে প্রেসিডেন্সি কলেজ আর জুনিয়র বিভাগ থাকবে হিন্দু ইস্কুল নামে। এখন থেকে তাদের হাঁড়ি আলাদা। ১৮৫৩ সালের ২১ অক্টোবর বাংলা, বিহার, ওড়িশার গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসি কলকাতায় সব ধর্মের ছাত্রদের জন্য একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন৷ সেই কলেজের নাম দেন ‘দ্য প্রেসিডেন্সি কলেজ’৷ হিন্দু কলেজের সব ছাত্রকে প্রেসিডেন্সি কলেজে বদলি করা হয়৷ এর ফলে হিন্দু কলেজ বলে আর কিছু রইল না। হিন্দু কলেজের ইতিহাস তাই মোট ৩৭/৩৮ বছরের একটা আখ্যান। বাংলার সাংস্কৃতিক জাগরণের ক্ষেত্রে এই কলেজ ও এই কলেজের ছাত্রদের ভূমিকা অনস্বীকার্য৷ হিন্দু কলেজের কয়েকজন বিশ্রুত ছাত্র হলেন রামতনু লাহিড়ী, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, রাধানাথ শিকদার, প্যারিচাঁদ মিত্র, শিবচন্দ্র দেব, রামগোপাল ঘোষ, কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রসিককৃষ্ণ মল্লিক প্রমুখ…৷ বস্তুত, এই তালিকা এতটা সংক্ষিপ্ত নয়৷

১৯৯৩

অড্রে হেপবার্ন (১৯২৯-১৯৯৩) এদিন প্রয়াত হন। নিজের চলচ্চিত্রের শিরোনামেই তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত ‘মাই ফেয়ার লেডি’ নামে।

হলিউডের সর্বকালের সেরা সুন্দরী নায়িকার অন্যতম। সৌন্দর্য, সৌষ্ঠব, লাবণ্যের প্রতিমূর্তি তিনি। জাদুকরী মুখশ্রী দিয়ে ঘায়েল করেছেন কোটি কোটি তরুণ হৃদয়। তাঁর অভিনয় অসাধারণ করেছে ‘ব্রেকফাস্ট অ্যাট টিফানিস’, ‘শ্যারেড’, ‘দ্য চিলড্রেন্স আওয়ার’, ‘প্যারিস হোয়েন ইট সিজলস’, ‘দ্য নানস স্টোরি’, ‘ফানি ফেস’, ‘হাউ টু স্টিল আ মিলিয়ন’, ‘মাই ফেয়ার লেডি’র মতো ছবিকে। এক ‘রোমান হলিডে’র জন্যই আলাদা করে মনে রাখতে হবে তাঁকে। আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট সর্বকালের সেরা অভিনেত্রীদের একটি তালিকা করেছিল। তাতে তৃতীয় স্থান দখল করে আছেন অড্রে হেপবার্ন। প্রথম ক্যাথরিন হেপবার্ন, দ্বিতীয় বেটি ডেভিস। অড্রের পরে আছেন ইনগ্রিড বার্গম্যান, গ্রেটা গার্বো, মেরিলিন মনরো, এলিজাবেথ টেলররা। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ সম্মানজনক চারটি পুরস্কার— এমি, গ্র্যামি, অস্কার ও টনি জিতেছেন। তিনরকম টিউলিপ, লিলি ও গোলাপের নামকরণ হয় অড্রে হেপবার্নের নামে। তাঁর নামে ১৯৫৯ সালে হলিউডের খুব কাছে লাস ভেগাসে একটি রাস্তার নামও রাখা হয়।

১৯৮৮

সীমান্ত গান্ধী আবদুল গফফর খান

(১৮৯০-১৯৮৮) এদিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ব্রিটিশ ভারতের অহিংস স্বাধীনতা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। সীমান্ত গান্ধী নামে বেশি পরিচিত। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে তাঁর অহিংস স্বাধীনতা আন্দোলন ব্রিটিশ শাসকদের জন্য বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল। নিজে একজন ‘সেক্যুলার মানুষ’ ছিলেন। সাধারণভাবে ধর্ম নিয়ে এবং মুসলমানদের মধ্যে ধর্ম নিয়ে ভাগাভাগিতে তিনি বিশ্বাস করতেন না। একসময় একটি ‘স্বাধীন ও ধর্মনিরপেক্ষ ভারত’ দেখার ফর্মুলা তাঁর মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। এ লক্ষ্যে তিনি ‘খুদা-ই-খিদমতগার’ (ঈশ্বরের দাস) নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, যেটা সাধারণভাবে ‘সুখ পশ (রেড শার্ট)’ বলে অধিক পরিচিত ছিল। তিনি এই লাল শার্ট বাহিনী গান্ধীর সত্যাগ্রহের মডেলে তৈরি করেছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় এক লাখ সদস্য ছিল। তিনি তাদের বলেছিলেন, ‘‘আমি তোমাদের এমন একটি অস্ত্র দেব যার নাম সততা ও ধৈর্য। পৃথিবীর কোনও শক্তিই তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবে না।” সীমান্ত গান্ধীর স্বপ্নমাফিক দেশভাগ রদ করা যায়নি। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ পাকিস্তানের মধ্যে চলে যায়। সেখানে তিনি সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেও তাঁকে নানাভাবে সন্দেহ করা হয়। ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি গৃহবন্দি-সহ নানা শাস্তি ভোগ করেন। এরপর বহুবার তাঁকে কারাগার ও গৃহে অন্তরীণ করে রাখা হয়। গৃহবন্দি অবস্থাতেই পেশোয়ারে মারা যান। তাঁকে তাঁর বাড়ি আফগানিস্তানের জালালাবাদে সমাধিস্থ করা হয়। প্রায় ২ লাখ জনতার মধ্যে আফগানিস্থানের প্রেসিডেন্ট নজিবুল্লাহও জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

Previous articleএকনজরে আজকের পেট্রোল-ডিজেলের দাম 
Next articleনেতড়ায় ভ.য়াবহ অ.গ্নিকান্ড! ভ.স্মীভূত চামড়ার কারখানা, কারণ নিয়ে ধোঁ.য়াশা