সুমন করাতি, হুগলি
মহালয়ার ঠিক আগের দিন, যখন শহর-গ্রামজুড়ে পুজোর প্রস্তুতির শেষ পর্যায় চলছে, তখন হুগলির (Hoogli) চণ্ডীতলায় দেখা গেল এক অন্য পুজোর (Durga Pujo) ছবি। যেখানে চোখ না থাকলেও, মনের চোখে এবং স্পর্শে মা দুর্গাকে অনুভব করা। হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়-এর উদ্যোগে উত্তরপাড়া মাখলার দুটি ব্রেল স্কুলের দৃষ্টিহীন (Special Child) ছাত্রছাত্রীদের জন্য আয়োজন করা হয় এই বিশেষ প্রতিমা দর্শনের। আরও পড়ুন: দুর্গাপুজো ঘিরে সতর্ক কলকাতা পুলিশ, বৃষ্টি মাথায় মণ্ডপ পরিদর্শন নগরপালেরচণ্ডীতলার পটুয়াপাড়ার প্রতিমাশিল্পীদের গলিতে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুদের। সেখানে তারা হাতে ছুঁয়ে অনুভব করে মা দুর্গার রূপ— মহিষাসুর, গণেশ ঠাকুরের শুঁড়, কার্তিকের ময়ূর, লক্ষ্মীর পেঁচা, সরস্বতীর বীণা ও মায়ের পদযুগল। তাদের চোখ নেই, কিন্তু অনুভবের স্পষ্টতা এতটাই গভীর যে মূর্তিগুলোর প্রতিটি খুঁটিনাটি তাদের মনে গেঁথে যায়। সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুজোর ক’দিনে মণ্ডপে গেলে ওরা দেখতে পায় না, আবার ছুঁয়ে দেখার সুযোগও থাকে না। তাই মাতৃপক্ষ শুরুর আগে ওদের হাতে করে মা-কে দেখিয়ে দেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য।”
শুধু প্রতিমা দর্শন নয়, এদিন ছোটরা গান গেয়ে, কবিতা বলে মেতে ওঠে উৎসবে। শেষ মুহূর্তে হাতে তুলে দেওয়া হয় খাবারের প্যাকেট ও জল। ছিল জেলা জনশিক্ষা অধিকর্তা সুদীপ্তা মজুমদার, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এবং স্থানীয় সংগঠন প্রকৃতি ও নবজাগরণ সংঘ-র সদস্যরা। এই অন্য পুজো জানিয়ে দিল— ঈশ্বর শুধু চোখে দেখার জন্য নয়, অনুভবেরও। আর অনুভবের জন্য চোখের দরকার পড়ে না, লাগে কেবল ভালোবাসা আর ছুঁয়ে দেখার সুযোগ।

–

–

–

–

–

–

–

–
