করোনা-যুদ্ধের দ্বিতীয় ধাপের কৌশল প্রায় চূড়ান্ত, জেনে নিন কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা

করোনা-মোকাবিলায় বৃহত্তর এবং কার্যকর পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক৷ ১৪ এপ্রিলের ২-১ দিন আগে নতুন এই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই৷

নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর,

◾নতুন এই পরিকল্পনায় গোটা দেশকে ছোট ছোট একাধিক এলাকায়
ভাগ করা হবে৷

◾ছোট গণ্ডিতে ভাগ করে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র।

◾ছোট ছোট ভৌগোলিক ক্ষেত্রে দেশকে ভাগ করার উদ্দেশ্য, যে অঞ্চলে রোগটা ছড়িয়েছে, সেখানে থেকে রোগটা যাতে কোনোভাবেই অন্য অঞ্চলে ঢুকে যেতে না পারে।

◾এই প্রক্রিয়ার সফল প্রয়োগ হলে নিশ্চিতভাবেই দেশে করোনা- শৃঙ্খল ভাঙা যাবে বলেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে।

◾নতুন পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ২০০৯ এবং ২০১৫ সালে সোয়াইন ফ্লু যে ভাবে ছড়িয়েছিল, ২০২০ সালে করোনা-ও ঠিক সে ভাবেই ছড়াচ্ছে৷
যদিও করোনার প্রকোপ দেশের সর্বত্র এক রকম নয়৷

◾করোনা দেশের এক এক অংশে এক এক রকম প্রভাব ফেলেছে৷ অর্থাৎ গোটা দেশে একইভাবে ছড়াচ্ছে না। নতুন পরিকল্পনায় এই তারতম্যকেই কাজে লাগানো হচ্ছে৷

◾দৃষ্টান্ত হিসাবে
মহারাষ্ট্র এবং মুম্বই শহরের উল্লেখ করা হয়েছে৷

◾৬ এপ্রিলের তথ্য বলছে, মহারাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০০ কাছাকাছি৷ আর শুধুমাত্র মুম্বইতেই ৪৫০ ছাড়িয়েছে।

◾একই ভাবেই ভাইরাস ছড়ানোর গতি অনেকটাই বেশি তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, দিল্লি, রাজস্থানের ভিলওয়ারা, কেরলের কাসারগড় ইত্যাদি জায়গায়।

◾তুলনায় অনেকটাই কম বিহার, ছত্তীসগঢ়, অসম, পশ্চিমবঙ্গে৷ এই সব রাজ্যের অবস্থা অনেকটাই ভালো।

◾জানা গিয়েছে, নতুন এই কৌশল নিয়েই ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা দেশের সব জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, রাজ্যগুলির স্বাস্থ্যসচিবদের নিয়ে এক ভিডিও বৈঠক করেছেন।

◾করোনার প্রকোপ যে সব অঞ্চলে সব থেকে বেশি, সেখানকার প্রশাসনিক কর্তারা তাঁদের বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা ক্যাবিনেট সচিবকে
জানিয়েছেন।

◾নতুন পরিকল্পনায় ঠিক হয়েছে, গোটা দেশকে দু’ ধরনের জোন বা ক্ষেত্রে ভাগ করা হবে।

◾একটি হচ্ছে কন্টেনমেন্ট জোন বা Containment Zone, যেখানে রোগটা বেশি ছড়িয়েছে বা রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা সব থেকে বেশি।

◾দ্বিতীয়টি, বাফার জোন Buffer Zone, যেখানে রোগ বেশি ছড়ায়নি।

◾এই দুই জোনের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে৷

◾যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্য, দ্বিতীয় জোন-কে করোনার প্রকোপ থেকে রক্ষা করা৷

◾প্রথম জোন থেকে ভাইরাস যাতে বেরিয়ে দ্বিতীয় জোনে না যেতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা।

◾প্রতিটি ক্ষেত্র বা জোন-এর জন্য পাঁচ দফা প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে ।

🔺 প্রতিটি ভৌগোলিক গণ্ডিকে বিচ্ছিন্ন রাখা।

🔺সামাজিক দূরত্ব কঠোর ভাবে পালন করা।

🔺 অনেক বেশি ও নিরন্তর নজরদারি।

🔺 প্রয়োজন বুঝলেই কোয়ারেন্টাইন তথা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

🔺 সংক্রমণের প্রকৃত অবস্থা বা সংক্রমণ কতদূর ছড়িয়েছে, তা জানতে কেন্দ্র খুব শীঘ্রই ব্যাপক হারে ‘র‌্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট’ শুরু করতে চলেছে।

◾এক-একটি ছোট এলাকা কার্যত সম্পূর্ণ ‘সিল’ করা হবে।

◾অত্যাবশ্যক পরিষেবায় যুক্তরা বাদে বাকিদের সেখান থেকে বেরোনো বা সেখানে ঢোকা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত হবে।

◾বন্ধ থাকবে সরকারি- বেসরকারি সব ধরনের যান চলাচল, স্কুল-কলেজ ও দফতর।

◾বাড়ি বাড়ি চলবে সমীক্ষা। কারও উপসর্গ দেখা দিলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

◾কড়াকড়ি শিথিল করা হতে পারে শুধুমাত্র একটি শর্তে৷

◾অন্তত ৪ সপ্তাহ ওই নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকা থেকে কোনও ‘করোনা পজিটিভ’ রোগীর দেখা না পেলেই চালু থাকা শর্ত শিথিল হবে৷

◾কেন্দ্র আপাতত মনে করছে, এই পরিকল্পনা লাগু করা হবে ১৫ এপ্রিল থেকে৷

◾১৪ এপ্রিলের পর গোটা দেশে হয়তো লকডাউন থাকবে না।

◾সেদিন থেকে অনেক এলাকায় স্বাভাবিক জনজীবন ফিরতে পারে৷ আবার অনেক এলাকা ফের লকডাউনের আওতায় আসতে পারে।

◾যে সব এলাকায় লকডাউন চলবে, সেখানে কমপক্ষে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত লকডাউন থাকতে পারে।

Previous articleময়দানে অনাহারে থাকা ঘোড়াদের মুখে খাবার তুলে দিল কলকাতা পুলিশ
Next articleলকডাউন কি ১৪ এপ্রিল শেষ হচ্ছে? জল্পনা জিইয়ে রাখলেন মন্ত্রী