বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে৷ পর পর ৩ দিন কলকাতার প্রথম সারির প্রায় সব হাসপাতাল থেকে নার্সদের গণ ইস্তফা চলছেই৷ এই সব হাসপাতালের পরিষেবা প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে৷ এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরও।
মনিপুর, মিজোরাম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ, কেরল, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ইত্যাদি রাজ্যের কয়েকশো নার্স বহুদিন ধরেই কলকাতার প্রায় সব প্রথম সারির হাসপাতালে কর্মরত৷ কেন এভাবে হঠাৎ কলকাতা ছাড়ছেন তাঁরা ? এই ঘটনা দেখে বোঝাই যাচ্ছে, এভাবে ইস্তফা দেওয়ার ঘটনা পূর্ব-পরিকল্পিত, একেবারেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ কলকাতা ছাড়তে চলেছেন এমন একাধিক নার্সের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে একাধিক কারন৷ তবে নির্দিষ্টভাবে বলা মুশকিল, আসলে কেন দলে দলে নার্স কলকাতা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন৷ মোটামুটিভাবে যে সব কারনের হদিশ মিলেছে, তা এই রকম :
◾ভিন রাজ্যের এই নার্সরা যখন কলকাতায় এসেছিলেন, সেই সময় তাঁদের রাজ্যে কাজের সুযোগ ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই কলকাতায় এসেছিলেন। এখন নিজেদের রাজ্যে কাজের সুযোগ দিচ্ছে সরকার। তাই প্রবাসী জীবন ছেড়ে রাজ্যে ফিরতে চাইছেন ভিন রাজ্যের নার্সরা৷
◾ ভিন রাজ্যের নার্সরা কলকাতায় যা বেতন পান, তার থেকে অনেক বেশি বেতনের প্রতিশ্রুতি মিলছে নিজের রাজ্য থেকে।
◾ বাবা-মা, স্বজনদের ছেড়ে রোজগারের টানেই কলকাতায় এসেছিলেন। এখন নিজের রাজ্যেই কাজের সুযোগ মিলছে, তখন বাড়িতে থেকেই নিজেদের পেশায় থাকতে চাইছেন ভিন রাজ্যের নার্সরা৷
◾ কলকাতায় প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও। কলকাতার পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত ভিন রাজ্যের নার্সদের পরিবার। দিনে পাঁচ-সাতবার ফোন করে নিজেদের সন্তানদের খোঁজ নিয়ে চলেছেন। বেশির ভাগ নার্স- পরিবারই এদের কাজ ছেড়ে বাড়ি চলে আসতে বলছে৷ কলকাতায় জাঁকিয়ে বসেছে করোনা৷ এই সময় নিজের রাজ্যে ফিরে গেলে পরিবারের লোকেরা চিন্তামুক্ত হবে।
◾ সব থেকে বড় কারন, নিজের রাজ্যে ফিরেও কাজের সুযোগ পাচ্ছেন প্রায় সবাই।
এদিকে, এই ঘটনায় এক বড় সমস্যায় পড়েছে রাজ্য সরকারও৷ কলকাতার বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালকে করোনা হাসপাতাল হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন৷ এইসব হাসপাতালের নার্সদের বেশিরভাগই উত্তর-পূর্ব ভারতের৷ ফলে নার্সদের এভাবে গণ- ইস্তফা পত্র জমা দেওয়ায় উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকারও৷