বিজয়ন প্রেমপত্র নয়, CAA বিরোধী প্রস্তাব পাশের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন: সেলিম

রাজ্যে সিপিএম তথা বামেদের নীতি, কেন্দ্রের বিজেপি ও বাংলার তৃণমূল সরকারের থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে সমদূরত্ব বজায় রাখা। অথচ, NRC ও CAA বিরোধিতার জন্য কেরলের বাম মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছে। এতে কি মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে না? এই প্রশ্নের উত্তরে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম জানান, পিনারাই বিজয়ন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। ব্যক্তিগত ভাবে প্রেমালাপ করেননি বা প্রেমপত্র দেননি। শুধু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নন, দেশের যেসব রাজ্যের রাজ্য সরকার CAA বিরোধিতা করছে, সবাইকে বিজয়ন চিঠি দিয়েছেন। যাতে রাজ্য সরকারগুলি কেরালার মতোই নিজেদের রাজ্যের বিধানসভায় CAA বিরোধী প্রস্তাব পাশ করায়।

এরপর সেলিম বলেন, শুধু বিজয়ন নয়, সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও তো বিধানসভায় CAA বিরোধিতার প্রস্তাব পাশ করানোর কথা বলেছেন। কে কটা মিছিল করলো সেটা বড় কথা নয়। বিধানসভায় বিষয়টি আনা মানে একটা রেকর্ড। ওই জন্যই তো লোকসভা-বিধানসভায় ভোটাভুটি হয়। আসলে প্রতিবাদের স্লোগান মা মাটি মানুষ হয় না, ইনকিলাব জিন্দাবাদ হয়। সেটা দেখিয়ে দিচ্ছে গোটা দেশ।

৮ জানুয়ারির বনধ যদি তৃণমূল সরকার বাধা দেয়, সেক্ষেত্রে বামেদের অবস্থান কী হবে? সেলিমের কথায়, “বিভাজনের বিরুদ্ধে যারা, তাদের সবাইকে স্বাগত এই ধর্মঘটে। যদি তৃণমূল সত্যিকরের NRC-CAA বিরোধিতা করে থাকে, তাহলে এই বনধকেও সমর্থন করবে। এবার মানুষের যা মেজাজ, তাতে কে সমর্থন করলো, কে করলো না, কিছু যায় আসে না। ধর্মঘটের সমর্থনে গোটা দেশের মানুষ পথে নামবেন।”

কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে একহাত নিয়ে সেলিম বলেন, “NRC-CAA বিরোধিতায় এত মানুষের, এত অংশের পথে নামা স্বাধীন ভারত এর আগে কখনও দেখেনি। আর দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, যাই হয়ে যাক তাঁরা নাকি পিছপা হবে না। এটাকেই বলে স্বৈরতন্ত্র। গণতন্ত্রে মানুষ সমালোচনা করার সুযোগ পায়। স্বাধীনভাবে নিজেদের মত প্রকাশের সুযোগ পায়। কিন্তু মোদি সরকার সেটা করতে দিচ্ছে না। উত্তর প্রদেশে অত্যাচার করছে। ওদের বিরোধিতা করলেই মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। পুলিশ এখন বিচারক। ইংরেজ আমলের মতো সম্পত্তি কেড়ে নিচ্ছে। কে পুলিশ, কে RSS বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশ লুঠ করছে। মহিলাদের উপর অত্যাচার করছে। মানুষ যখন মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব নিয়ে লড়ছে, তখন মোদী NRC-CAA করে বেড়াচ্ছে। ইরানে জেনারেল সুলেমানকে মেরে ফেলা হল একটি দেশের রাষ্ট্রপতির কথায়। আন্তর্জাতিক খুনে মেতেছে আমেরিকা। সেখানে চুপ মোদি। আসলে তিনিও দেশের মধ্যে খুন খেলায় মেতেছেন। তাই কেন্দ্রের বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে গোটা দেশে ৮ জানুয়ারি শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেত মজুর, ছাত্র-যুব এই ধর্মঘটে সামিল হবে। NPR ও NRC বিরুদ্ধেও এই বনধ। সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি।”

আরও পড়ুন-দফতর পছন্দ না হওয়ায় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা শিবসেনা বিধায়কের

Previous articleকলকাতা পুরভোটে বেনজির চমক তৃণমূলের প্রচারে, কণাদ দাশগুপ্তের কলম
Next articleমোদি বাংলায় এলেই দেখানো হবে কালো পতাকা, এটাই এখন দেশের ট্রেন্ড: সেলিম