বক্তব্য আর বয়ানে ফারাক: রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

পুজোর অনুদান নিয়ে দায়ের করা মামলার দ্বিতীয়দিনের শুনানিতে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা কলকাতা হাইকোর্টের। শুক্রবারের শুনানিতে বিচারপতি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী টাকা দেওয়ার সময় যা ঘোষণা করেছিলেন, তার সঙ্গে বিজ্ঞপ্তির বয়ান মিলছে না”। ক্লাবগুলিকে অনুদান দেওয়ার ঘোষণার সময় মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবছর সংকটজনক পরিস্থিতিতে বিজ্ঞাপন পেতে অসুবিধা হচ্ছে বলে ক্লাবগুলোকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। কিন্তু পরে অনুদানের বিষয়ে নবান্ন থেকে যখন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়, তখন সেখানে ক্লাবগুলিকে মাস্ক, স্যানিটাইজার কেনার জন্য টাকা দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে তার ফারাক রয়েছে বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি।

বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, দল নির্বিশেষে প্রত্যেকে আমলাতন্ত্রের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে। আমলারা রাজনৈতিক দলের ফলে কাজ করতে পারছেন না। রাজ্যের আমলাতন্ত্র মজবুত হলে এই অবস্থা হয় না। “বিচারবুদ্ধিতে আমলারা আপনাদের থেকে এগিয়ে” মত সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

বিচারপতি প্রশ্ন করেন, যেখানে মহামারি আইন চালু রয়েছে, মাস্ক না পরে বাড়ি থেকে বেরোনোটা অপরাধ। সেখানে কী করে ধরে নেওয়া হচ্ছে, সবাই মাস্ক না পরেই বেরিয়ে আসবেন, আর পুজো মণ্ডপে গিয়ে মাস্ক নিয়ে পরবেন।

টানা লকডাউনে আর্থিক সঙ্কটে দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে সরকারি অনুদানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের সিটু নেতা সৌরভ দত্ত। সেই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার, হাইকোর্টের একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। প্রশ্ন ওঠে, অনুদান কি শুধু দুর্গাপুজোতে দেয় সরকার, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভেদাভেদ করা যায়?
সরকার বলছে টাকা দেওয়া হচ্ছে মাস্ক-স্যানিটাইজারের জন্য, সেটা তো সরকারই কিনে দিতে পারত
সংক্রমণের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, সেখানে পুজোর অনুমতি কীভাবে? কী কী সুরক্ষা বিধি মেনে চলা হচ্ছে? এসব প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। শুক্রবারে শুনানিতে বক্তব্য আর বয়ানের পার্থক্য নিয়ে প্রশ্ন করেন তিনি।

আরও পড়ুন-নীরব নবান্ন, পুজোর আগে লোকাল ট্রেন চলার সম্ভাবনা নেই, জানাল রেল

Previous articleআজ থেকে পাঁচ দিনের জন্য খুলে গেল শবরীমালা মন্দির
Next articleপাকিস্তানও ভালভাবে করোনা সামলেছে, মোদিকে খোঁচা রাহুলের