১০ বছর ধরে ভিক্ষুক এক পুলিশ কর্তা, ডিএসপি সাহায্য করতে গিয়ে দেখলেন নিজেরই ব্যাচমেট

কিছু জিনিস বাস্তবে ঘটলে মনে হয়, এটাই তো সিনেমায় দেখলাম। এবার এমনই এক ‘সিনেমার’ সাক্ষী থাকলো মধ্যপ্রদেশ। ১০ বছর আগে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এক পুলিশ অফিসারকে দেখা গেল ভিক্ষুকের বেশে। তাঁকে দেখলেন মধ্যপ্রদেশ পুলিশের এক ডিএসপি৷ ঠান্ডায় কাঁপছিলেন ওই ভিক্ষুক। তাঁকেই সাহায্য করতে এগিয়ে গিয়েছিলেন ডিএসপি। গিয়ে দেখলেন নিজেরই ব্যাচের পুলিশ অফিসার।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রে উপনির্বাচনের ভোটগণনার পর ডিএসপি রত্নেশ সিং তোমার এবং বিজয় সিং ভদোরিয়া ঝাঁসি রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন৷ গাড়িতে যাওয়ার সময়ই ফুটপাথে মধ্যবয়সি এক ভবঘুরেকে ঠান্ডায় কাঁপতে দেখেন তাঁরা৷ তাঁর দুর্দশা দেখে গাড়ি থামায় দুই ডিএসপি। তাঁকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে যান তাঁরা৷ রত্নেশ সিং নিজের জুতো জোড়া ওই ভিখারীকে দিয়ে দেন৷ আর বিজয় সিং নিজের জ্যাকেট দেন তাঁকে৷ এর পর ওই ভবঘুরের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই দুই অফিসার বুঝতে পারেন, ওই ভবঘুরেই আসলে তাঁদেরই ব্যাচের নিখোঁজ এক পুলিশ অফিসার৷

ওই ভবঘুরের নাম মণীশ মিশ্র৷ ১০ বছর আগে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ ১৯৯৯ সালে পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি৷ এর পর মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন থানার দায়িত্বে ছিলেন৷ ২০০৫ সাল পর্যন্ত পুলিশে চাকরি করেন৷ নিখোঁজ হওয়ার আগে দাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ছিলেন মনীশ মিশ্র৷ কিন্তু তার পর থেকেই ধীরে ধীরে তাঁর মানসিক অবস্থার অবনতি হয়৷ পরিবারের সদস্যরা তাঁর চিকিৎসাও শুরু করেন৷ কিন্তু হঠাৎ একদিন নিখোঁজ হয়ে যান তিনি৷ আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি তাঁকে। অবশেষে দু ডিএসপি তাঁকে রাস্তার ধারে দেখতে পান। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে মণীশের খোঁজ না পাওয়ার ফলে তাঁর স্ত্রী তাঁর পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন৷ ডিভোর্স নিয়ে নেন৷ আর মাঝের এই এতগুলো বছর রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করেই কেটেছে ওই পুলিশ অফিসারের৷

ডিএসপি রত্নেশ সিং তোমার এবং বিজয় সিং ভদোরিয়া জানিয়েছেন, নিখুঁত নিশানার জন্য একসময় তিনি পুলিশ মহলে সুনাম কুড়িয়েছিলেন৷ ১৯৯৯ সালে তাঁদের সঙ্গে সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন মণীশ৷ তাঁর যে এমন পরিণতি হতে পারে, তা ভাবতেও পারছেন না তাঁরা৷ এরপর ওই দুই অফিসার মিলে মণীশের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর স্মৃতি ফেরানোর চেষ্টা করেন৷ নিজেদের সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত দুই ডিএসপি একটি সমাজসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন৷ তারাই এসে মণীশকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন-ফের এক মারণ মিসাইলের সফল পরীক্ষা ভারতের, নির্ভুল লক্ষ্যে ধ্বংস করল বিমান

Previous articleমায়ের ভোগে শোল মাছ আবশ্যিক, তন্ত্র সাধনার তারাপীঠে ভক্তের ঢল
Next articleআদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল, কালীপুজোর আগেই বাজিসহ গ্রেফতার একাধিক