সিঙ্গুর মডেল নয়, সবাই ক্ষতিপূরণ পাবে: দেওচা পাঁচামির প্যাকেজ ঘোষণায় মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর

সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে যা করা হয়েছিল আমরা তা করব না৷ সবাই যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাবেন। দেওচা পাঁচামি খনির জন্য পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণা করে বিধানসভায় মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। এই খনি প্রকল্পে পঁয়ত্রিশ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে সরকার। তার মধ্যে দশ হাজার কোটি টাকার পুনর্বাসন প্যাকেজ হিসেবে থাকছে। এই প্রকল্পে এক লক্ষেরও বেশি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে বলে জানান মমতা।

মঙ্গলবার, বিধানসভায় এই ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সিঙ্গুরে (Singure) জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে যা করা হয়েছিল আমরা তা করব না৷” বীরভূমের (Burbhum) মহম্মদবাজার ব্লকে দেওয়ানগঞ্জ হরিনসিংহ কোল ব্লকে প্রায় ৩ হাজার ৪০০ একর জমিতে ১ হাজার মেট্টিকটন কয়লা ও প্রায় ১ হাজার ৪০০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার ব্যাসল্ট ডিপোজিট রয়েছে।

সরকার যে জোর করে এখানে কিছু করবে না তা অনেক আগেই জানিয়ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন বিধানসভাতেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে কথা বলেই পুনর্বাসন প্যাকেজ (Package) করা হয়েছে যাতে এখানকার মানুষ যাদের জমি-বাড়ি অধিগৃহীত হবে তাঁরা যথাযথ ক্ষতিপূরণ পান। এরপরেও যদি কেউ কোনও গ্রহণযোগ্য উপদেশ দেন সেটাও বিবেচনা করে দেখবে সরকার।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিপুল কোল রিজার্ভ সমন্বিত এই কোল ব্লক (Coal Block) দেশের সব থেকে কোল ব্লক গুলির অন্যতম। এই প্রকল্প এলাকায় ১২ টি গ্রাম রয়েছে। এই গ্রামগুলিতে ৪ হাজার ৩১৪ টি বাড়িতে প্রায় ২২ হাজার মানুষ বসবাস করেন। যার মধ্যে ৩৬০১ জন এসসি এবং ৯০৩৪ জন এসটি। এখান থেকে উত্তোলিত কয়লা শুধু বীরভূম জেলা নয় গোটা রাজ্য তথা দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে। কয়েকটি ফেজে এই প্রকল্পটি করা হবে। প্রথম ফেজে দেওয়ানগঞ্জ হরিনসিংহ এলাকা যেখানে কম গভীরতার কোল ডিপোজিট আছে সেটির কাজে হাত দেওয়া হবে। এই প্রকল্প থেকে কয়লা তোলার প্রকল্প শুরু করার আগে রাজ্য সরকার সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছে বলে জানান মমতা। তপশিলী, আদিবাসী-সহ এলাকার সমস্ত মানুষের স্বার্থ যাতে সুরক্ষিত থাকে সে বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।।

এক ঝলকে এই প্রকল্প ও পুনর্বাসন প্যাকেজ:

১. মোট পুনর্বাসন প্যাকেজ মূল্য ১০ হাজার কোটি টাকা।

২. প্রকল্প এলাকায় যাঁদের জমি বাড়ি রয়েছে তাঁরা বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা পাবেন। এছাড়াও আরও অন্যান্য খাতে পাবেন সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা সঙ্গে আরআর কলোনিতে ৬০০ বর্গফুটের একটি বাড়ি পাবেন।

৩. যে সব পরিবার বাড়ি বা জমি হারাবেন অথবা বর্গাদাররা পরিবারপিছু একজন জুনিয়র পুলিশ কনস্টেবল র‍্যাঙ্কে চাকরি পাবেন। এদের সংখ্যা হল ৪৯৪২।

৪. প্রায় ৩ হাজার জন ক্রাশার লেবার এক বছরের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে পাবেন এককালীন।

৫. প্রকল্প এলাকায় কর্মরত প্রায় ১৬০ জন কৃষি শ্রমিক এককালীন ৫০ হাজার টাকা করে পাবেন। এর সঙ্গে ৫০০ দিনের জন্য ১০০ দিনের কাজ পাবেন।

৬. ২৮৫ জন ক্রাশার মালিক তাঁদের জমি, বিল্ডিংয়ের দাম এবং ৫০ হাজার টাকা শিফটিং অ্যালাওয়েন্স পাবেন। এছাড়াও ৬ মাস ধরে প্রতিদিন ১০ ট্রাক ব্যাসল্ট বিনামূল্যে পাবেন এবং কাছেই চাঁদা মৌজায় যে ব্যাসল্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি হবে সেখানে পুনর্বাসন পাবেন।

আরও পড়ুন:আকাশ পথে ১৫ নভেম্বর থেকে পর্যটক ভিসা দেবে ভারত 

Previous article‘ব্রাহ্মণ ও ব্যবসায়ীরা আমার পকেটে’, বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি নেতার, নিন্দা করেছে কংগ্রেস
Next articleকলকাতা-হাওড়ায় ডিসেম্বরে পুরভোট, আইনি পথে হাঁটতে পারে বিজেপি