টাকায় টিকিট: তথাগতর অতীত মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে তোপ কুণালের

বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিভিন্ন রকম প্যাকেজে টিকিট দেওয়া হয়েছিল। কেউ কেউ এসেছিল ইডি, সিবিআইয়ের ভয়ে

টাকার বিনিময় পুরভোটের টিকিট বিলি করছে বিজেপি(BJP)। প্রার্থী পিছু নেওয়া হচ্ছে এক লক্ষ টাকা করে। সম্প্রতি এমনই লেনদেন সংক্রান্ত এক কথোপকথনের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই ইস্যুতে বিজেপিকে তুলোধোনা করলেন তৃণমূলের(TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। তিনি জানালেন, তথাগত রায়(Tathagata Roy) জানিয়েছেন বিজেপিতে এইসব টাকার খেলা চলে। ফলে যে ভিডিও প্রকাশ্যের এসেছে তাকে আগেই মান্যতা দিয়েছেন বিজেপির বর্ষিয়ান নেতা তথা প্রাক্তন রাজ্যপাল।

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল ঘোষ বলেন, “কোন ভিডিও প্রকাশ্যে এলে তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকে। এটা যেমন ঠিক, তেমনি এটাও ঠিক বিজেপি বর্ষিয়ান নেতা তথা প্রাক্তন রাজ্যপাল আগেই বিবৃতি দিয়েছিলেন বিজেপিতে টাকার খেলা চলে। বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিভিন্ন রকম প্যাকেজে টিকিট দেওয়া হয়েছিল। কেউ কেউ এসেছিল ইডি, সিবিআইয়ের ভয়ে। ফলে টাকার বিনিময়ে বিজেপির টিকিট বিক্রির ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারদের এই ঘটনাগুলি এড়িয়ে যাওয়ার কোনও জায়গাই নেই।”

আরও পড়ুন:টাকার নিয়ে পুরভোটের টিকিট বিলি বিজেপি! ভিডিও ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য

পাশাপাশি এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ত্রিপুরা ইস্যুতেও সরব হন কুণাল ঘোষ। সম্প্রতি ত্রিপুরার এক ভিডিও ভাইরাল হতে দেখা গিয়েছে। যেখানে বিপ্লব দেবের পাশে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্য সভায় বিজেপি বিধায়ক হুমকি দিচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থীকে দেখলেই তাড়া করার জন্য। এ প্রসঙ্গে কুনাল ঘোষ বলেন, “এটা স্পষ্টতই আদালত অবমাননা। প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে একজন বলছেন তৃণমূল প্রার্থীকে দৌঁড় করানোর জন্য। এই ধরনের মন্তব্য প্রমাণ করে ওরা মানুষের থেকে কতটা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে এইসব উত্তেজনামূলক বিবৃতি দিচ্ছেন। পাশাপাশি ত্রিপুরা পুলিশকে অনুরোধ করবো এটা নিয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ করার জন্য।”

উল্লেখ্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ কলে বিজেপির ২ রাজ্য নেতার কথোপকথন। “প্রীতম সরকার নামে রাজ্য বিজেপির এক উচ্চপদস্থ নেতা আর এক বিজেপি নেতৃত্বকে জানাচ্ছেন, টিকিট পিছু এক লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। হোয়াটসঅ্যাপ কলে প্রীতম জানাচ্ছেন, “আজ সকাল ৯ টা থেকে আমার একটি মিটিং রয়েছে সুকান্ত মজুমদারের(বিজেপির রাজ্য সভাপতি) সঙ্গে। যেখানে পাঁচজন জেলা সভাপতিও থাকবেন। বাজেট নিয়ে তোমাদের কি কোনো রকম কথা হয়েছে।” পাল্টা ফোনের এপারে থাকা ব্যক্তি বলেন, “আমরা ১২ জন প্রার্থী চাইছি। সে ক্ষেত্রে তোমরা কত টাকা চাইছো আমাকে জানাও।” পাল্টা প্রীতম নামের ওই ব্যক্তি জানায়, “১২টা হবে কিনা জানি না, তবে প্রার্থী পিছু ১ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে।” এরপরই অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তি জানায়, “এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় তোমরা একটু কমাও।” প্রীতম জানায়, “আমার কমানোর কিছু নেই, সে ক্ষেত্রে সুকান্ত মজুমদারকে রাজি করাতে হবে।” শুধু তাই নয় অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তি নিজেও এবার পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। নিজের আসন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করায় প্রীতম তাকে জানায়, তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কিছু নেতাদের সাহায্যে আপনারা আসনে জিত নিশ্চিত। বলাবাহুল্য বিজেপি নেতাদের এই কথোপকথন প্রকাশ্যে আসার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তবে কি টাকার বিনিময়ে পুরসভা নির্বাচনে টিকিট বিলি করছে শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্বরা?

 

Previous articleReal estate price hike : পশ্চিমবঙ্গে ফ্ল্যাটের দাম প্রতি বর্গফুটে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা বাড়তে পারে
Next articleManipur Attack:মণিপুরে সেনা কনভয়ে হামলার যৌথভাবে দায় স্বীকার করল দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন