মন খুশি হল নাকি নস্টালজিয়ায় ভারাক্রান্ত! জেনে নিন ‘দিলখুশ’-এর রিভিউ রিপোর্ট

নীলায়নের সুর করা এবং নিজের গাওয়া ' সজনী' যথাযথভাবেই ব্যবহার করেছেন পরিচালক। যদিও দর্শকের মনে আগামী কতদিন এই গানের স্থায়িত্ব থাকবে তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়।

” কীসের ভালবাসা যদি বদ্ধ বদ্ধ না লাগে ,বুকভরা প্রত্যাশা যদি তোকে নিয়ে না জাগে” – ঠিক এইরকম একটা ভাবনা থেকেই রাহুল মুখোপাধ্যায়ের (Rahool Mukherjee) ‘দিলখুশ'(Dilkhush)। কিন্তু প্রশ্ন হল দর্শক খুশি হতে পারলেন কি? সিনেমার ভাষায় বলতে গেলে রান্নায় ঘি এবং প্রেমের চুমু নাকি যত খুশি তত চলে। কিন্তু বাস্তবে যে সেটা সত্যি নয় সেটা সিনেমা দেখতে দেখতে হলে যাওয়া দর্শকদের উসখুস করাতেই বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠল। শুক্রবার মুক্তি পেল নতুন বাংলা চলচ্চিত্র ‘দিলখুশ’, অভিনয় করেছেন পরান(Paran Bandopadhyay), অনুসূয়া (Anusuya Majumder), খরাজ, অপরাজিতা(Aparajita Adhya), অনন্যা, মধুমিতা, সোহম( Soham Majumder), ঐশ্বর্য, উজান ।

প্রেমের মরশুমে ভালোবাসার গল্প বড়পর্দায়। দিলখুশ আসলে একটি ডেটিং অ্যাপ। যার মাধ্যমে এক বৃদ্ধ বৃদ্ধার একাকিত্বের গল্পের সুতো মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনুসূয়া মজুমদার। দুজনের বৃদ্ধ বয়সের রোমান্টিক অন স্ক্রিন কেমিস্ট্রিকে অনেকের চোখে নতুন করে ধরিয়ে দিয়েছে এই সিনেমায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিমুহূর্তে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকা এই প্রজন্মের এক মিষ্টি মেয়ে ঐশ্বর্য। তথাকথিত ক্যাবলা ছেলে উজানের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। ধীরে ধীরে সম্পর্কের রসায়ন গড়ে ওঠে। এই দুই জুটিকে আগামীতে আরও বেশি করে বড়পর্দায় দেখার অপেক্ষায় থাকবেন দর্শকরা সেটা বলাই বাহুল্য।

ফুড হোম ডেলিভারির ব্যবসা চালিয়ে জীবন কাটান এক মহিলার গল্প বলে এই ছবি। যে চরিত্রে সাবলীল অভিনয় করেছেন অপরাজিতা। যত সময় যাচ্ছে বাংলা ছবির জন্য তিনি কেমন যেন অপরিহার্য হয়ে পড়ছেন। মন ছেড়ে মঞ্চের এক অভিনেতার (খরাজ মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে জীবনের রসায়ন পর্দায় ফুটিয়ে তোলেন তিনি।

মধুমিতা (যে নিজের জীবন নিয়ে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত) আর সোহম (নিম্ন মধ্যবিত্ত নায়ক) ঘটনার ঘনঘটায় একে অন্যের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এই ছবির শুরুতেই একজন অন্যজনের প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে। মধুমিতা সোহম চরিত্ররা যখন উত্তরবঙ্গে পৌঁছয় তখন প্রেমের নাগরদোলায় সম্পর্কের ওঠা পড়া শুরু হয়ে গেছে।

ছবিতে তাবড় তাবড় অভিনেতারা নজর কাড়বেন এটা প্রত্যাশিত ছিল। তবে চিত্রনাট্যের গতি যদি আরেকটু কম হোঁচট খেত তাহলে বোধহয় প্রেমের সিনেমার রসবোধ আরও একটু বেশি ভালো করে উপভোগ করতেন দর্শকরা। সিনেমার প্রথমার্ধে একাকিত্বে ভোগা রক্ত মাংসের চরিত্ররা দ্বিতীয়ার্ধে কীভাবে হিমবাহের মতো গলে যায়, এটা আরেকটু স্পষ্ট হওয়া দরকার ছিল। অনির্বাণের কন্ঠে ‘বিবাগী ফোন’ শুনতে বেশ ভাল লাগে । নীলায়নের সুর করা এবং নিজের গাওয়া ‘ সজনী’ যথাযথভাবেই ব্যবহার করেছেন পরিচালক। যদিও দর্শকের মনে আগামী কতদিন এই গানের স্থায়িত্ব থাকবে তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়।

Previous articleজেলে ফেরার দু’মাস না পেরোতেই ফের গুরমিতের ৪০ দিনের প্যারোলের আর্জি মঞ্জুর, কিন্তু কেন?
Next articleপ্রধানমন্ত্রীরও রেহাই নেই! গাড়িতে সিটবেল্ট না পরে জরিমানার মুখে ঋষি