সদ্যোজাত সন্তানকে কোলে পেতে কেন প্রশাসনের দ্বারস্থ এই মা?

হাসপাতালে পৌঁছে নিজের সন্তানকে দেখেই চিনতে পারেন গৃহবধূ। কিন্তু যে দম্পতির কাছে শিশুটি ছিল তারা দিতে রাজি হয় না। যদিও স্থানীয়দের চাপের মুখে তারা স্বীকার করে ওই সন্তান তাঁদের নয়।

জমজ সন্তানের মা হলেন। তারপরেই মায়ের কোল থেকে ‘চুরি’ করে অন্য মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হল সদ্যজাত এক সন্তানকে। এবার সেই সন্তানকে ফিরে পেতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ঘুরছেন মা। এমনই বেদনাতুর পরিস্থিতির সম্মুখিন শিলিগুড়ি। ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট। যদিও টাকার বিনিময়ে সন্তান বিক্রির প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।

কিছুদিন আগে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার বাসিন্দা এক গৃহবধূ বাড়িতে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তবে তাঁর গর্ভে জমজ সন্তান ছিল, যা তিনি জানতেন না। কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে মাটিগাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখানেই আরেকটি সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তবে বাড়ি ফিরে জানতে পারেন তাঁর কন্যাসন্তানটি মারা গিয়েছে। শিশুটির শেষকৃত্যও সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে।

এরই মধ্যে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ওই গৃববধূর বাড়িতে খবর আসে, সেখানে কন্যাটিকে দেখা গিয়েছে। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছে নিজের সন্তানকে দেখেই চিনতে পারেন গৃহবধূ। কিন্তু যে দম্পতির কাছে শিশুটি ছিল তারা দিতে রাজি হয় না। যদিও স্থানীয়দের চাপের মুখে তারা স্বীকার করে ওই সন্তান তাঁদের নয়। গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়ি তাঁদের কাছে সন্তানটি পালনের জন্য দিয়েছিল।

পরিবারের লোকেদের দাবি, গৃহবধূর স্বামী কয়েক মাস আগে মারা গিয়েছে। এর আগে তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আরও দুটি সন্তানের পালন সম্ভব নয় ভেবেই সদ্যোজাত কন্যাটি অন্য দম্পতিকে দিয়ে দেয় শ্বশুর-শাশুড়ি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ আউটপোস্টে অভিযোগ দায়ের করেন গৃহবধূ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শ্বশুর-শাশুড়ি ও কন্যাসন্তানকে নেওয়া দম্পতিকে গ্রেফতার করে।

সমস্যা শুরু হয় কন্যাকে গৃহবধূ নিজের কাছে নিতে চাইতেই। কন্যাটি বাড়িতে হওয়ায় তাঁর জন্মের নথি তৈরি করা হয়নি। তার আগেই শিশুর হাত বদল হয়ে যায়। বর্তমানে গৃববধূ শিশুর জন্মের কাগজ, গৃহবধূর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার কাগজ ও পরিচয়পত্র নিয়ে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির দ্বারস্থ। এখান থেকেই তিনি নিজের সন্তানকে কোলে পাওয়ার আশায় আছেন।

Previous articleহাওড়ার জলাজমি থেকে উদ্ধার যুবকের রক্তাক্ত দেহ, পুলিশের জালে দুই অভিযুক্ত
Next articleপরীক্ষা কেন্দ্রে ২০ জন পরীক্ষার্থী পিছু একজন করে শিক্ষক, নয়া সিদ্ধান্ত পর্ষদের