‘বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প’ চালু করে আসলে রেশনে ভর্তুকি কমাচ্ছে মোদি সরকার

ভোটমুখী কর্ণাটক থেকে মধ্যপ্রদেশে শুরু হয়েছে প্রচার। মোদি সরকার বিনামূল্যে সবাইকে রেশন দিচ্ছে। আর এর পুরো খরচ বহন করছে কেন্দ্রীয় সরকার।পোস্টার ছাপানো থেকে রেশন-গ্রাহকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে চলছে প্রচার।বাস্তবে জনসাধারণকে যে বোকা বানানো হচ্ছে তা আবারও প্রকাশ্যে। আগামী বছরের বাজেটে খাদ্য ভর্তুকিতে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে চাইছে মোদি সরকার।

আরও পড়ুন:জিজ্ঞাসাবাদে কিনারা করতে না পেরে এবার কুন্তল ঘোষের বাড়িতে ঢুকল ইডি
২৪ এর লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে গেরুয়া বাহিনী।এরমধ্যে চলতি বছরে জম্মু-কাশ্মীর-সহ ১০ রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে নিশানা করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রের ‘বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প’ নিয়ে ঢাক পিটিয়ে প্রচারে নামছে কেন্দ্রের শাসক দল। উল্টো দিকে মোদি সরকার আগামী বাজেটে খাদ্য ভর্তুকিতে খরচ ছাঁটাই করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, চলতি অর্থ বছরে খাদ্যে যে পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হয়েছে, আগামী অর্থ বছরে অত ভর্তুকি প্রয়োজন হবে না। কারণ বিনামূ্ল্যে রেশন দিলেও কোভিডের সময়ে চালু হওয়া ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’-য় বাড়তি রেশন আর দিতে হচ্ছে না।

গত বাজেটে খাদ্য ভর্তুকিতে প্রথমে ২.০৭ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু কোভিডের সময়ে বিনামূল্যে বাড়তি রেশন দিতে যে ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’ চালু হয়েছিল, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটের কথা মাথায় রেখে তা ডিসেম্বর পর্যন্ত চালাতে হয়েছে। তার জন্য সম্প্রতি খাদ্য ভর্তুকি বাবদ অতিরিক্ত ৬০,১১০ কোটি টাকা খরচের জন্য সংসদের ছাড়পত্র নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের হিসেবে, সংশোধিত আকারে সব মিলিয়ে চলতি অর্থ বছরে প্রায় ২.৮৬ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হবে। কিন্তু আগামী অর্থ বছরে খাদ্য ভর্তুকি বাবদ মাত্র ১.৯৭ লক্ষ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। যার অর্থ, চলতি অর্থ বছরে প্রাথমিক ভাবে খাদ্য ভর্তুকিতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, আগামী অর্থ বছরে তার তুলনায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা কম বরাদ্দ হতে পারে। সামগ্রিক ভাবে দেখলে, চলতি বছরের মোট খরচের তুলনায় আগামী বছরে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা কম খরচ হবে।

কী ভাবে তা সম্ভব হচ্ছে? সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনে আগের মতোই চাল-গম দেওয়া হবে। কিন্তু তার জন্য আর দাম নেওয়া হবে না। সেই জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের মাত্র ১৮,৫০০ কোটি টাকা বাড়তি খরচ হবে। কিন্তু উল্টো দিকে ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’-য় যে বাড়তি রেশন দেওয়া হচ্ছিল, তা জানুয়ারি থেকে দেওয়া হবে না। তাতেই বিপুল সাশ্রয় হচ্ছে। যার ফলেই খাদ্য ভর্তুকিতে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। বিজেপি নেতারা অবশ্য জানিয়ে দিচ্ছেন, রেশনে খরচ ৯০ হাজার কোটি টাকা কমলেও, বিনামূল্যে রেশনে প্রচার হবে হাজার গুণ বেশি।

Previous article“দিদির সুরক্ষা কবচ” কর্মসূচি নিয়ে থানায় বিধায়ক! কিন্তু কেন?
Next articleআকাশ দীপের দাপুটে বোলিং-এর সৌজন্যে হরিয়ানার বিরুদ্ধে ইনিংস এবং ৫০ রানে জয় বাংলার