শতবর্ষ আগের প্রেক্ষাপট, ফিরিয়ে দিল সময়

একশ বছরে তবে কি ইতিহাসের পূনরাবৃ্ত্তি। একশ বছর আগে অর্থাৎ ১৯১৯ সালের আঠারই মার্চ, আর একটা দেশজোড়া আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল । প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ । দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে কাহিল ব্রিটিশ শক্তি । দেশের অভ্যন্তরে তখন স্বদেশী আন্দোলন উত্তাল। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্রিটিশ সরকার এক সন্ত্রাসবাদ বিরোধী এবং দমনমূলক আইন প্রণয়ন করেন । কুখ্যাত রাউলাট আইন ।বৈপ্লবিক কার্যকলাপের মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে বড়লাটের আইন সচিব সিডনি রাওলাটের সভাপতিত্বে কমিটি গঠিত হয়। রাওলাট কমিটি কতগুলি সুপারিশ করে। প্রথমত, সন্দেহভাজন যে কোন ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা যাবে, দ্বিতীয়ত, আটক ব্যক্তিকে বিনা বিচারে বন্দী রাখা যাবে, তৃতীয়ত, বিশেষ আদালতে তার বিচার হবে, চতুর্থত, ঐ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না, সর্বশেষ, সরকার বিরোধী যে কোন প্রচার দণ্ডনীয় বলে গণ্য হবে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা হয় এবং সরকার সাধারণ আইনের প্রয়োগ স্থগিত রেখে, জনসাধারণকে চরম পুলিশি ও প্রশাসনিক অত্যাচার ও নির্যাতনের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয় ।এই আইনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে জালিয়ানওয়ালাবাগে ব্রিটিশ সরকারের সংগঠিত নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেশকে স্তব্ধ করে দেয়। পরের বছর শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। ১৯২২ সালে হিংসার সীমা ছাড়ায় এই আন্দোলন। চৌরিচৌরার ঘটনায় গান্ধীজি ইতি টানেন আন্দোলনের। সরকারের কোনও সিদ্ধান্তের বিরোধিতা মানেই সেটি দেশদ্রোহিতা, এই ভাবনা ব্রিটিশ রাউলাট আইনে উল্লেখ ছিল। তবে কি বদলায়নি দেশ এই একশ বছরে! তবে কি শুধু শাসনের রঙ বদলেছে ! করোনায় মারা গেছেন যত জন তার অনেক গুন বেশী সংখ্যায় মানুষ মারা গেছেন এনআরসি বিরোধী আন্দোলনে। অসহযোগ আন্দোলন সেদিনও হিংসার পথ নিয়েছিল। আজকেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। আঠারই মার্চ ১৯১৯, রাউলাট আইনের সূচনা হয়েছিল। ২০২০ সালের আঠারই মার্চ। আরএকবার ভেবে দেখার দিন।

 

আরও পড়ুন-দায়িত্বজ্ঞানহীন সেই আমলার কাছ থেকে করোনা কাদের মধ্যে ছড়াতে পারে?

Previous articleপ্রয়োজনে বেঙ্গালুরু যেতে চান কমল নাথ
Next articleকরোনা নিয়ে গুজব ছড়ালেই কড়া ব্যবস্থা, ট্যুইট বার্তা কলকাতার পুলিশ কমিশনারের