ভারতে দ্রুত ছড়াচ্ছে সংক্রমণ, বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হলো কলকাতাকে

লকডাউনে শিথিলতার খেসারত দিচ্ছে ভারত৷

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, সোমবার পর্যন্ত দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,৩৮,৮৪৫ জন। এই মারণ ভাইরাসের বলি হয়েছেন ৪,০২১ জন। দেশের ৭ রাজ্যের ১১টি পুরসভা অঞ্চলেই মোট করোনা-রোগীর ৭০% বলে চিহ্নিত করা গিয়েছে। এই তালিকায় আছে কলকাতা পুরসভা এলাকাও। সোমবার বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে কলকাতা তথা বাংলাকে৷

চতুর্থ দফার লকডাউন চলছে, তার মধ্যেও ভারতে করোনা সংক্রমণের ঘটনা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত ২ দিনে দেশে নতুনভাবে আক্রান্তের হার ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে । এই ধারা বজায় থাকলে আগামী বুধবারের মধ্যে ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৫০ হাজার অতিক্রম করবে৷ সোমবার এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যেই উদ্বেগের খবর, সর্বাধিক করোনা আক্রান্ত বিশ্বের ১০ আক্রান্ত দেশের তালিকায় ভারত আগেই ঢুকে পড়েছে। ভারতের নাম এখন ১০ নম্বরে। এই গতিতে এগোলে এই দেশ চলতি সপ্তাহেই প্রথম পাঁচে চলে যেতে পারে৷ ওয়ার্ল্ডমিটারস-এর তথ্য অনুসারে, মৃতের সংখ্যার নিরিখে বিশ্বে ভারতের স্থান এখন ১৫ নম্বরে।
করনো সংক্রমণের শুরুর দিকে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার গতি অনেক শ্লথ ছিল। কিন্তু সেই পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। সর্বাধিক করোনা সংক্রমিত অধিকাংশ দেশের তুলনায় এই মুহূর্তে ভারতে নতুন করে আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গোটা বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে আগাম সতর্ক করে দিয়েছেন পরিসংখ্যানবিদরা। এমন চলতে থাকলে দিনকয়েকের মধ্যেই ভারতের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উপরে আরও বড় ধাক্কা আসতে চলেছে বলে তাঁদের আশঙ্কা।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এদিন জানিয়েছে, দেশের ৭টি রাজ্যের ১১টি পুরসভা এলাকার জন্য আগামী ২ মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই তালিকায় রয়েছে কলকাতাও। এই এলাকাগুলিকে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। এই সতর্কবার্তার কারণ, প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমণের নয়া রেকর্ড হচ্ছে এই সব এলাকায়। ওই ৭ রাজ্যের প্রশাসন, নাগরিক-সহ সকলকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এই ৭ রাজ্য হলো মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাট, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ রাজস্থান এবং পশ্চিমবঙ্গ৷

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, দেশের মোট করোনা আক্রান্তের ৭০ শতাংশই এই রাজ্যগুলির অন্তর্গত ১১টি পুরসভা অঞ্চলের। এই তালিকায় পড়ছে কলকাতা পুরসভা এলাকাও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদানের পরামর্শ, করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে এই পুরসভার বাসিন্দাদের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। ৭ রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের বক্তব্য, “শহরগুলির ঘনবসতি, বস্তি অঞ্চল এমনকী বহুতলেও করোনা প্রতিরোধ অভিযান চালাতে হবে। বাড়তি নজর দিতে হবে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের দিকে।’

Previous articleআমফানের দাপটে পাটুলির ভাসমান বাজারে বিসর্জনের সুর
Next articleক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখতে চলতি সপ্তাহেই রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় দল