ত্রিপুরায় আজ খুঁটি পুজো, ২০২৩-এ বিসর্জন: বিপ্লব দেবকে উপড়ে ফেলার ডাক অভিষেকের

ত্রিপুরায় আজ খুঁটি পুজো করলাম। ২০২৩-এ বিসর্জন দেব। আগরতলায় (Agartala) রবীন্দ্র ভবনের সামনের সভা মঞ্চ থেকে বিপ্লব দেব (Biplab Dev) সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ঘোষণা করলেন তৃণমূলের (Tmc) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)। সভা মঞ্চ থেকে একের পর এক ত্রিপুরার বিজেপি (Bjp) সরকারের দিকে তোপ দাগেন অভিষেক। বিপ্লব দেবের সরকারকে উপড়ে ফেলার ডাক দিয়ে অভিষেক বলেন, ২০২৩-এ ফেব্রুয়ারি বিজেপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তারপর সেখানে উন্নয়নের সরকার গড়া হবে- আশ্বাস তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের। বলেন, “শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে ত্রিপুরার মানুষের জন্য লড়ব, এক ছটাক জমি ছাড়ব না।”

আদালতের নির্দেশ মতো কোভিড বিধি কঠোর ভাবে মেনে এদিন সভা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে যেসব তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক সভায় আসতে চেয়েছিলেন, তাঁরা দূর থেকেই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক-সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য শুনেছেন। কোথাও গাছের তলায়, কোথাও কোন নীচে দাঁড়িয়ে দূর থেকেই নেতাদের বার্তা পৌঁছে গিয়েছে তাঁদের কাছে। বলা যায়, আগরতলা কার্যত এদিন ছিল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের দখলে।

আরও পড়ুন:ডিসেম্বরেই ত্রিপুরায় আসবেন নেত্রী, জানিয়ে দিলেন অভিষেক

“ত্রিপুরায় ছিল হার্মাদ, এখন এসেছে উন্মাদ।” ত্রিপুরায় জঙ্গলরাজ চলছে বলে অভিযোগ করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০২৩-এর ফেব্রুয়ারিতে পরিবর্তন হবে ত্রিপুরায়। সেখানে উন্নয়নের বন্যা বইবে। অভিষেক আশ্বাস দেন ২০২৩-এ তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার তিনমাসের মধ্যে ত্রিপুরায় (Tripura) সব উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালু হবে। বিজেপির গুন্ডা বাহিনীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “যারা আজ বাইক নিয়ে গুন্ডাগিরি করছে, তাদেরই দুয়ারে সরকারের উন্নয়নের কাজে লাগাব”।

তীব্র কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, বিজেপিকে আনা মানে খাল কেটে কুমির আনা। বিপ্লব দেবের ছুটি হয়ে গিয়েছে। যদি ত্রিপুরার মানুষ অবাধে ভোট দিতে পারেন তাহলে ২০২৩-এর পরে অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে বিজেপিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না- মন্তব্য অভিষেকের।

বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগামী দিনে ত্রিপুরা থেকে দিল্লি (Delhi) পরিচালিত হবে, দিল্লি রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে ত্রিপুরা পরিচালনা করবে না।

ত্রিপুরা লাগাতার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের উপর আক্রমণ করছে বিজেপি পুলিশ। এমনকি মহিলানেত্রী সুস্মিতা দেবের উপরে আক্রমণ করেছে বিজেপি পুলিশ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন অভিষেক। পরামর্শ দেন, “যাঁরা তৃণমূলকে সমর্থন করেন, তাঁদের বেরোতে হবে না, মনে মনে রাখুন। ভোটের সময় চুপচাপ জোড়া ফুলে ছাপ দিয়ে বিজেপিকে বিদায় দিন।”

ত্রিপুরার কথা বলতে গিয়ে গোয়ার উদাহরণ টেনে আনেন তৃণমূল সাংসদ। জানান, “গোয়ায় কাজ শুরু করে দিয়েছি। তিনমাসের মধ্যে সেখানে তৃণমূল সরকার হবে।”

তবে ২০২৩ নয়, তার আগে পুরভোট থেকেই যে সেখানে তৃণমূল ক্ষমতা দখল করতে চাইছে, এদিন তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, করোনার থেকেও ভয়ংকর ভাইরাস বিজেপি। একটাই ভ্যাকসিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। “পুরভোটে একটা ভ্যাকসিন, আর ২০২৩-এ আর একটা ভ্যাকসিন দিয়ে বিজেপি ভাইরাসকে তাড়াতে হবে।”

ত্রিপুরায় ইদানিংকালে যতবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করতে চেয়েছেন, ততবারই বাধা দিয়েছে বিজেপি সরকার। শনিবারের সভা বানচাল করার সবরকম চেষ্টা করেছিল বিপ্লব দেবের প্রশাসন। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় নৈতিক জয় হয় তৃণমূলের। সভা করতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কাল কোর্টে জিতেছি 2023-এ ভোটে জিতব, কোর্ট দিয়ে শুরু আর ভোট দিয়ে শেষ।”

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কোভিড বিধি মেনে সভা হয়। সভা ঘিরে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিপুল উন্মাদনা ছিল। দলনেতার প্রত্যেক কথায় তুমুল হাততালি দিয়ে সমর্থন জানিয়েছে উপস্থিত জনতা।

 

Previous articleহেমন্তে শীতের আমেজ, তবে শীত আসতে এখনও কিছু দেরি, জানাল হাওয়া অফিস
Next articleমালদহের মা জহুরার পুজোয় একাকার হয়ে যায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত