৪ পুরসভায় ভোট: শেষ লগ্নের প্রচারে শুধুই তৃণমূল, পাত্তা নেই বিরোধীদের

আগামী শনিবার বিধাননগর, আসানসোল, চন্দননগর ও শিলিগুড়ি পুরসভার (West Bengal Municipal Elections) ভোট। এই ৪ পুরসভার ২১৭ টি ওয়ার্ডের ২ হাজার ১৩৮ টি মোট বুথকেই স্পর্শ কাতর বলে চিহ্নিত করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই সাঁইথিয়া ও বজবজের পর দিনহাটা পুরসভা দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। আর এ নিয়ে শোরগোল তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। শনিবার পুরভোট। প্রচারের শেষ প্রহরে বিধাননগরে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের ঘিরে গল্প-আড্ডায় মেতে উঠলেন নাগরিকরা। বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দলের প্রতি তাঁদের বিশ্বাস এবং আস্থা অটূট। প্রাক্তন মেয়র এবং ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের এবারেরও নজরকাড়া তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে মধ্যমণি করে এদিন সকালে বসেছিলেন বিভিন্ন ব্লকের বাসিন্দারা। তাঁর শুভকামনায় কেউ এনেছিলেন প্রসাদী ফুল, অনেকেই আবার জানিয়ে গেলেন আগাম শুভেচ্ছা। কৃষ্ণা বলেন,”মেয়র হিসেবে সীমিত সময়ের মধ্যে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি মানুষকে পরিষেবা দিতে। দীর্ঘ বা মজমানায় অবহেলিত পরিশ্রুত পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে। ভবিষ্যতে আরও উন্নত পরিষেবা আপনাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সদিচ্ছা রইল।”

সল্টলেকের আর এক হেভিওয়েট প্রার্থী প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত এদিন খোশ মেজাজে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পোলিং এজেন্টদের ফর্মে সই করেছেন। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী কাকলি সাহা শেষ মুহূর্তে জনসংযোগ সেরে নিলেন করুণাময়ী এবং লাগোয়া ডিএল ,ইই ব্লকে। ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে ঝড়ের গতিতে ছুটে বেড়ালেন প্রার্থী তুলসী সিংহ রায়। ৪১ নম্বরের প্রার্থী রত্না ভৌমিক বুধবার সন্ধেতেই বিডি ব্লকে আয়োজন করেছিলেন লতা মঙ্গেশকরের স্মরণসভা।

আরও পড়ুন-বিজেপিতে জুতো পালিশ করতে গেছেন শুভেন্দু, ফের কটাক্ষ কুণালের

আসানসোল পুরনির্বাচনের শেষ লগ্নের প্রচারে আবারও বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যের আইন ও পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটক। আইন মন্ত্রী এদিন মোট ১১ টি ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচার সারেন। এদিন বার্ণপুরের ৭৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এক বর্ণাঢ্য রোড শোতে অংশ নিতে দেখা যায় মলয় ঘটক এবং রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোকে। পুরভোটে তৃণমূল সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেলে আসানসোল পুর নিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ডকেই নবরূপে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে মলয় বাবু জানান। এদিন কুলটির ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি নির্বাচনী জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না ও পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু। অন্যদিকে পুরনিগমের ৭৬, ৭৭ ও ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীদের সমর্থনে জমজমাট রোড শো করেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অন্যদিকে শিলিগুড়িতে, নেপালি সম্প্রদায়ের মানুষের মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ। উন্নত শিলিগুড়ি করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শিলিগুড়ি পুরোবোর্ড উপহার দিতে চাইছে শিলিগুড়িবাসী। পুরো নির্বাচনের (West Bengal Municipal Elections) শেষ দিনের প্রচারে প্রায় সমস্ত ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি,কংগ্রেস কিংবা সিপিএম-কে বলতে গেলে খুঁজেই পাওয়া গেল না প্রচারের শেষলগ্নেও।

ভোট-পর্ব অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে কমিশন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, চার পুরসভার ভোটের জন্য রাজ্য পুলিশের ৯ হাজার বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৮ হাজার ৫০০ বাহিনী ভোটকেন্দ্রে মোতায়েন থাকছে। বাকি ৫০০ বাহিনী নাকা চেকিং-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। শুধু সশস্ত্র বাহিনী থাকছে ৫ হাজার ৫৫৭। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সশস্ত্র প্রহরী এবং লাঠিধারী কনস্টেবল থাকবে। চার পুরসভার সব বুথই স্পর্শ কাতর কমিশনের চোখে। তাই নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে নির্বাচন করাতে চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

 

Previous articleBook Fair: কলকাতা বইমেলায় থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ, লোগো উন্মোচন ঘিরে উন্মাদনা
Next articleকংগ্রেস- বিজেপির গোপন আঁতাত: গোয়ায় দুই প্রতিপক্ষকে ধুইয়ে দিলেন অভিষেক